মোঃসিদ্দিক খান(বিশেষ প্রতিনিধি মাদারীপুর)ঃ- পঞ্চদশ শতাব্দীর সুফি সাধক কুতুব-ই-জাহান হযরত বদিউদ্দীন আহমেদ জিন্দা শাহ মাদার (রঃ) এর নাম অনুসারে মাদারীপুর জেলার নামকরণ করা হয়। শাহ মাদার (রঃ) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সিরিয়া হতে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের শাসনকালে (১৩৫১-১৩৮৮খ্রি:) ভারতে পরে বঙ্গের নানা স্থানে ভ্রমণ করেন। মাদার্শা, মাদারবাড়ী, মাদারি খাল, মাদারীপুর, মাদারঠেক, শামান্দারের ঘাট তার শুভাগমনের স্থানীয় স্মৃতি রক্ষা করছে।ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পরে যে সকল সুফী সাধারন্যে অসাধারন প্রভাব বিস্তার করেন তাদের মধ্যে শাহ মাদার অন্যতম। চতুর্দশ শতাব্দীর কোনো এক সময়ে বঙ্গের বিভিন্ন স্থান ভ্রমনের এক পর্যায়ে তৎকালীন চন্দ্রদ্বীপের উত্তর সীমান্তে গভীর অরন্যের যে স্থানটিতে তিনি ক্ষণিকের অতিথি হয়ে সহযাত্রীদের নিয়ে যাত্রা বিরতি বা বিশ্রাম গ্রহণ করেছিলেন সে স্থানটিতে তার নামানুসারে হযরত শাহ মাদার (রঃ) এর দরগাহ শরীফ নামকরণ করে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মীত হয়েছে। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিক্রমপুরের জমিদার ভূমিহীন প্রজাদের পূনর্বাসনের লক্ষ্যে চন্দ্রদ্বীপের স্মৃতিবিজড়িত ঐ স্থানটিকে কেন্দ্র করে সরকার মাদারণ বা মাদারণ অঞ্চল নামে আখ্যায়িত করে ফসলি জমি ও আবাসন গড়ে তুলেন। যা পরবর্তীতে নগরায়নে রুপ নিতে থাকে, নাম হয় মাদারণ গ্রাম-উনিয়ন। পর্যায়ক্রমে নগর সভ্যতার বিবর্তনের ফলে মাদারণ নাম থেকে ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে মাদারীপুর থানা-সাব ডিভিশন, ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মাদারীপুর পৌরসভা এবং ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদারীপুর জেলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় শাহ্ মাদারের দরগাটি যেটি মাদারীপুরের শীর্ষ দর্শনীয় স্থান হবার কথা ছিল তা আজ জরাজীর্ণ। আমাদের সন্তানেরা আমেরিকা নামকরণের ইতিহাস জানলেও অনেকেই জানেনা নিজ জেলা মাদারীপুর নামকরণের ইতিহাস।অনেকে জানেই না শাহ্ মাদার কে,দরগা তো দূরে থাক।জানার আগ্রহ কেনই বা তৈরি হবে?একবার এখানে কেহ ভুলক্রমেও আসলে গাড়ি ভাড়ার টাকার জন্য আফসোস করতে হয়।কেননা এখানকার অবস্থা কোনো পর্যটকে আকর্ষণ করতে পারছে না।