জাতীয় দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক রিপোর্ট: দলীয় প্রতীক হিসেবে প্রথম পছন্দ হিসেবে ‘শাপলা’ চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই প্রতীক পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় নতুন প্রতীক হিসেবে শাপলা যুক্ত হলে তা বিধিসম্মতভাবে এনসিপির জন্য বরাদ্দ হবে বলে আশা রাখেন তিনি। সেই সঙ্গে অন্য একটি দল ‘শাপলা’ প্রতীক দাবি করলেও তা নির্বাচন কমিশন নিষ্পত্তি করবে বলেও জানিয়েছে এনসিপি।
রোববার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপি প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে এনসিপি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে দল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেন তারা।
আরও পড়ুনশাপলা প্রতীক চায় এনসিপি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন জমা দিলো এনসিপি দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নারী নেত্রীদের টার্গেট করা হয় ইসির নিবন্ধন পেতে চায় ১৪৭ রাজনৈতিক দল
সন্ধ্যা ৭টার দিকে নির্বাচন ভবনের নিচে নেতাকর্মীদের নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
দ্রুত নিবন্ধন পাওয়ার আশা নাহিদ ইসলাম জানান, রোববার নির্ধারিত সময়ে এনসিপির পক্ষ থেকে নিবন্ধন শর্তের চেয়েও বেশি কাগজপত্রসহ নিবন্ধন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করে কাগজপত্রসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। ২৫টি জেলা, ১০৫টি উপজেলা কমিটি ও প্রতিটি উপজেলায় ২০০ জন সমর্থক, অফিস চুক্তিসহ গঠনতন্ত্র, কাগজপত্র জমা দিয়েছি। আমরা আশাবাদী দ্রুত সময়ের মধ্যে এনসিপি নিবন্ধন পাবে।’
দলীয় প্রতীক যে কারণে শাপলা দলীয় প্রতীকের জন্য তিনটি পছন্দের কথা জানিয়ে এনসিপি আবেদন করেছে। শাপলা বা কলম বা মোবাইল প্রতীক চেয়েছে দলটি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রথম পছন্দ শাপলা। আশা করছি, জনগণের মার্কা হিসেবে, গণঅভ্যুত্থানের মার্কা হিসেবে, গ্রাম বাংলার প্রতীক হিসেবে এনসিপি শাপলা পাবে। শাপলা মার্কা নিয়ে আগামী দিনে নির্বাচনে অংশ নেবো।’প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রবাসী ভোটাধিকারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাহাত্তরের সংবিধানের ৪ মূলনীতি বাতিল চায় এনসিপি অবশ্যই ইসি পুনর্গঠন হবে: এনসিপি প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে একমত জামায়াত-এনসিপি, সায় নেই বিএনপির এনসিপিতে দুইবারের বেশি সভাপতি-সম্পাদক নয়।আমরা জোর দাবি জানিয়েছি প্রবাসীদের ভোটাধিকার যে কোনো মূল্যে যাতে রক্ষা হয়। এখনও ইসি সিদ্ধান্ত নেয়নি কোন প্রক্রিয়ায় হবে। দ্রুত সময়ে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন।’ যোগ করেন নাহিদ ইসলাম।
শাপলা পেতে বাধা নেই জাতীয় প্রতীক শাপলা কিভাবে এনসিপি বরাদ্দ পাবে? জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ইসির যে আইন-বিধি আমরা পর্যালোচনা করেছি, সেই আইনগুলোতে এ ধরনের কোনো বিধি-নিষেধ নেই। জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখিনি বলে আমরা এটিতে (শাপলা) আবেদন করেছি।’
জাতীয় প্রতীকের একটি কথা এসেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম জানান, জাতীয় প্রতীক কেবল শাপলা নয়। শাপলা, ধানের শীষ, তারকা-এগুলো মিলিয়ে জাতীয় প্রতীক।সেক্ষেত্রে ধানের শীষ, তারকা বা তারা – এ দুটোও দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। ফলে সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা দেখি না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা শাপলাকে মার্কা হিসেবে নিয়েছি। নদীমাতৃক বাংলাদেশের সবার কাছে পরিচিত শাপলা। সাধারণের দল হিসেবে আমরা শাপলাকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে আবেদন করেছি।’
এরই মধ্যে নাগরিক ঐক্য তাদের ‘কেটলি’ প্রতীক পাল্টে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘একটি দলের কথা বলেছিলেন, উনারা একটি প্রতীক অলরেডি পেয়েছেন। বিদ্যমান তালিকা থেকে যদি নিষ্পত্তি হয়ে যায়, বর্তমানে যে প্রতীক (শাপলা) চেয়েছে, সেটা নেই (বিধিমালায়)। ফলে এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন বিধিমালায় এনসিপির চাওয়া প্রতীকগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে আশা করেন তিনি। বর্তমানে যে প্রতীকগুলো (বাকি) রয়েছে তাতে ভালো কোনো প্রতীক দেখি না আমরা। নতুন প্রতীক আসার সিদ্ধান্ত হবে। পদ্ধতিগত ভুল কোনো সমস্যা বলে মনে করি না আমরা।’
সিইসির সঙ্গে প্রতীক নিয়েও আলাপ শাপলা প্রতীক নিয়ে আইনি কোনো বাধার কথা আলোচনার সময় সিইসি বলেছেন কিনা? জানতে চাইলে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা সিইসির কাছে বলেছি যে, সব শর্তাবলী ও আইন পর্যালোচনা করে আবেদন করেছি। প্রত্যাশা করবো, কমিশন নিরপেক্ষভাবে আইন অনুযায়ী উনাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সেক্ষেত্রে এনসিপি যাতে কোনো বৈষম্যের বা অবিচারের শিকার না হয়।’সংস্কারের কাজ চলমান উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপির কাছে এখনও প্রায়োরিটি হচ্ছে সংস্কার। সংস্কারের ওপর নির্ভর করে আমরা নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি সংস্কার, বিচার নিশ্চিত করা।