1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন

পাবনায় স্কুল কমিটির রোষানল; শিক্ষক এখন বর্গাচাষী!

মনসুর আলম খোকন,পাবনা জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩
মনসুর আলী খোকন,পাবনা  প্রতিনিধি: পাবনার বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার সানিলা মহল্লার বাসিন্দা মো: নায়েব আলী। দুই বছর আগেও পেশায় ছিলেন বেড়া বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার আগে বেড়া হাই স্কুলেও তিন বছর প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির রোষানলে পড়ে প্রায় দুই বছর বেতনভাতা না পেয়ে সংসার চালাতে এখন তিনি অন্যের জমি বর্গাচাষ করছেন। স্ত্রীসহ তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের পড়ানো ছেড়ে এখন তার দিন কাটে পরের জমিতে।
জানা যায়, মো: নায়েব আলী বেড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বেড়া বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই সময় বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেন। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে আ: বাতেনের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক নায়েব আলীর চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলালের বিরোধ শুরু হয়। এতে আব্দুল বাতেনের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন নায়েব আলী। নায়েব আলী জানান, এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল বাতেনের অনুসারী কিছু অসৎ শিক্ষক ও কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের পুকুর ও জায়গা জবরদখল করে রেখেছিল। এরই মাঝে সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে অফিস সহকারী পদে স্ত্রীর চাকরি দাবি করে আব্দুল বাতেনের এক সহযোগী। এসব অনৈতিক আবদারের বিরোধিতা করায় এক পর্যায়ে আব্দুল বাতেনের চক্ষুশূলে পরিণত হন প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী। পাশাপাশি চাচা আব্দুর রশিদ দুলালের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে তারা আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে। নায়েব আলী বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতিতে বাধা দেওয়ায় এক পর্যায়ে আব্দুল বাতেন ও তার অনুসারীরা আমাকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমার বিরুদ্ধে দরপত্রে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলে তারা। এ ঘটনায় উপজেলা কৃষি অফিসারকে প্রধান ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে একাধিক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন হলে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমাকে ৬০ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর আমার অবর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও  তাকে দায়িত্ব না দিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে তার আজ্ঞাবহ জুনিয়র শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন সভাপতি। নায়েব আলী আরও বলেন, অভিযোগ তদন্তে কমিটি কাজ শুরু করলে ম্যানেজিং কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের অসহযোগিতায় এখন পর্যন্ত তদন্ত কাজ হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে বেতন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও গত আড়াই বছরে আমাকে একটি টাকাও বেতনভাতা দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খবির উদ্দিন জানান, ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তদন্ত কমিটিকে কোনো নথিপত্র দেখায়নি। ফলে একাধিকবার চেষ্টা করেও তদন্তকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
২০২২ সালের ২ মার্চ  স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শামসুল হক টুকুর ছেলে, বেড়া পৌরসভার মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনকে সভাপতি করে ছয় মাসের জন্য নতুন এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। পরে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে নিজেকে সভাপতি করে দুই বছরের মেয়াদে ১০ সদস্যের ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন করিয়ে নেন আসিফ শামস রঞ্জন।এদিকে বেতনভাতা না পেয়ে জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ও মন্ত্রণালয়ে সুরাহা চেয়ে আবেদন করেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী। এর প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো: জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত একটি পত্রে সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক নায়েব আলীকে কেন বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও পরবর্তীতে ৩ অক্টোবর ২০২২ তারিখে সমুদয় বেতন ভাতা প্রদানের নির্দেশনা দিয়ে ম্যানেজিং কমিটিকে চিঠি দেওয়া হয়। এরপরেও নায়েব আলীকে বেতন ভাতা দেয়নি ম্যানেজিং কমিটি। দিনের পর দিন বেতন না পেয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী। জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই করছেন অন্যের জমি চাষবাস। ভুক্তভোগী বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী জানান, যে সকল অভিযোগ এনে আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে, তার কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। যার কারণে তারা তদন্তও করতে দেন নাই। সাময়িক বরখাস্তের ৬০ দিন পেরিয়ে গেলেও তারা আমাকে বেতনভাতা দূরের কথা, আমাকে স্কুলের আশেপাশেও যেতে দেন না সভাপতির অনুসারীরা। হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, নিয়ম থাকলেও আমি এ দায়িত্ব পাইনি। কেন পাইনি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, পছন্দের ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিতে, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম আগ্রহী নন এমন লিখিত মুচলেকা দিতে বাধ্য করা হয়। সভাপতির অনুসারীরা বিদ্যালয়কে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে। এসবের প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাংবাদিক পরিচয় দিলে কথা বলবেন না জানিয়ে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে আবারও ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল বাতেনের ফোনে কল দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় কমিটির বর্তমান সভাপতি আসিফ রঞ্জন শামসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। ক্ষুদেবার্তায় পরিচয় ও এ বিষয়ে তার বক্তব্যের প্রয়োজনীয়তা জানিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।এ ব্যাপারে পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নতুন যোগদান করায় বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Facebook Comments
১ view

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি