শিরোমনি ডেস্ক রিপোর্ট: মঙ্গলবার মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব নিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের খবরটি অনেককে অবাক করেছে। রুশ জাহাজ উরসা মেজরকে বাংলাদেশে ঢুকতে না দেওয়ায় তাঁকে তলব করা হয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উরসা মেজরকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে বারণ করে দেয় বাংলাদেশ। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর জাহাজটির মোংলা বন্দরে ভেড়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকতে না পারলেও বঙ্গোপসাগরের আশপাশেই ছিল উরসা মেজর।
মস্কোর স্থানীয় সময় অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আন্দ্রে রোদেনকো তাঁর দপ্তরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছিলেন। বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে ডেকে রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক কোনো রকম রাখঢাক ছাড়াই তাঁর সরকারের অসন্তোষের কথা তুলে ধরেন। প্রায় আধা ঘণ্টার আলাপচারিতায় আন্দ্রে রোদেনকো বলেছেন, উরসা মেজরকে বাংলাদেশে পণ্য খালাস করতে না দেওয়ার খবরটি রাশিয়ার গণমাধ্যমে কিছুটা দেরিতে প্রকাশ পেয়েছে। খবরটি প্রকাশের পর রাশিয়া সরকার জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সম্পর্ক। বিশেষ করে একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে বাংলাদেশকে প্রবলভাবে সমর্থন করেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়কাল থেকে রুশ জনগণের কাছেও মস্কো-ঢাকা সম্পর্ক বিশেষ মাত্রা বহন করে। কিন্তু উরসা মেজরকে বাংলাদেশকে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া ঐতিহাসিক সম্পর্ক থেকে সরে আসা বলে মনে করছে রাশিয়া। পরীক্ষিত বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের এ আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে হয়েছে, এমনটাই মন্তব্য করেছেন আন্দ্রে রোদেনকো। তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের অব্যাহত চাপ আছে বাংলাদেশের ওপর। তারা বাংলাদেশকে নিজেদের পক্ষ নিতে মরিয়া। এরপরও বাংলাদেশ তার স্বকীয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ অবস্থানে আছে।