1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৬:১৩ অপরাহ্ন

কমিউনিস্ট নির্মূলের নামে ইন্দোনেশিয়া গনহত্যা

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সমাজতন্ত্রীরা যখন বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে তখনই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মোড় ঘুরিয়ে দেয় ইন্দোনেশিয়ার।  সুকর্ণর ‘গাইডেড ডেমোক্রেসি’ কে হটিয়ে জেনারেল সুহার্তো ক্ষমতা দখল করে। এর সূত্রপাত হয় ’৬৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে ১ অক্টোবর ভোরের ভেতর ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর ৬ জেনারেলকে হত্যার ঘটনায়।

বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংবাদ অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের পর সৈন্যরা সুকর্ণর সমর্থন চায় এবং আন্দোলনকে বেগবান করতে বলে। কিন্তু সুকর্ণ এর পক্ষপাতী ছিলেন না। ফলে দেশে যেন অস্থির অবস্থার সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে রেডিও বার্তা পাঠাতে থাকেন।

আন্দোলনকারীরা এই ঘটনার জের আর টানেনি। কিন্তু সুকর্ণর দূর্বল নেতৃত্ব ও তার বার্তার অসামঞ্জস্যতাকে পুঁজি করে ফেলে জেনারেল সুহার্তো। দিনের মধ্যেই এঁকে ফেলেন গণহত্যার নীলনকশা। ৫ অক্টোবর থেকে সমাজতন্ত্রীদের নামে মিথ্যে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে থাকে সুহার্তোর দল। জেনারেলদের হত্যার বানোয়াট ছবি ও তথ্য সম্বলিত পোস্টার, সংবাদপত্র ও লিফলেট বিতরণ করা হয় সর্বত্র। এতে বলা হয়, এই কম্যুনিস্টরা দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ডের পায়তারা চালাচ্ছে।

মিথ্যে হলেও এই ক্যাম্পেইন ছিল সফল। গণমানুষের ভেতর কম্যুনিস্টদের প্রতি ঘৃণা তৈরি হতে থাকে। ফলে কম্যুনিস্ট শুদ্ধি অভিযান একদম বিনা বাধাতেই শুরু হয়। সুকর্ণ বার কয়েক বিবৃতি দিয়ে এই উদ্দেশ্যকে প্রতিহতের চেষ্টা চালালেও লাভ হয়নি। কেননা সামরিক বাহিনীর সর্বময় ক্ষমতা তখন সুহার্তোর হাতে।

সেসময় চীন ও সোভিয়েত রাশিয়ার পরেই সর্ববৃহৎ কম্যুনিস্ট সমর্থক দল ছিল ইন্দোনেশিয়ায়। পিকেআই বা কম্যুনিস্ট পার্টি অফ ইন্দোনেশিয়ার সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ। শুদ্ধি অভিযানের ফলে প্রথম আঘাত আসে সুকর্ণর নাসাকম আইনের ওপর। এর মূল ভিত্তিই ছিল জাতীয়তাবাদ (Nationalism), ধর্ম (Religion) ও সমাজতন্ত্র (Communism)। সুহার্তো এর দুই নীতি সরিয়ে ইসলামিক রাজনীতি ও সামরিক নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করে।

মোট মৃতের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ আছে। ইতিহাসবিদদের মতে তা ৫ লাখ। তবে বিভিন্ন নথির ভিত্তিতে জানা যায় প্রকৃত সংখ্যা ১০ লাখ থেকে ২৫ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।

অভিযোগ আছে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাথাতেও। এই ‘ব্যাপক গণহত্যাযজ্ঞ’ সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা পূর্ব থেকেই জানতো। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে জানা যায়, ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত জাকার্তার মার্কিন দূতাবাসে এ সংক্রান্ত ৩৯টি নথি প্রকাশিত হয়েছিল। এই নথিসমূহে দেখা যায়, দেশটিতে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকেরা এই বর্বর গণহত্যা সম্পর্কে জানতেন। উক্ত সমাজের উচ্চ স্থানীয় মুসলিম নেতারা এতে যুক্ত ছিলেন বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।

জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভে প্রাপ্ত দলিলে বের হয়ে আসে আরও ভয়ানক সব তথ্য। সমাজতন্ত্র বিরোধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আঁতাত করেছিল সামরিক সরকারের সাথে। সহযোগিতার স্বার্থে ইন্দোনেশীয় কম্যুনিস্টদের বিশাল তালিকা তৈরি করে তুলে দিয়েছিল জান্তা সরকারের হাতে। সামরিক বাহিনীকে নানান পন্থায় সাহায্যের পাশাপাশি অর্থ ও হত্যার সরঞ্জাম দিয়েছিল তারা।

প্রকাশিত নথির সূত্র ধরে জানা যায়, ১৯৬৫ সালের ২৬ নভেম্বর সুরাবায়া শহরে তৎকালীন মার্কিন কনস্যুলের একটি টেলিগ্রামে হত্যাযজ্ঞের পূর্বাভাস ছিল। এতে বলা হয়, পূর্ব জাভায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানোর আভাস রয়েছে। মাত্র এক অভিযানেই ১৫ হাজার কমিউনিস্টকে হত্যা করা হতে পারে। ডিসেম্বরের ২১ তারিখের মধ্যেই ১ লাখ কম্যুনিস্ট ও তাদের পরিবারকে হত্যা করে সামরিক সরকার। এই ঘটনা আমেরিকা ও ইন্দোনেশিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও পোক্ত করে। ১৯৬৬ এর মার্চের মধ্যে পিকেআইকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সুহার্তো বাহিনী। স্নায়ুযুদ্ধে মিত্রে পরিণত হওয়া দেশটিকে বৃহদাকারে অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিতে থাকে মার্কিনীরা।

উক্ত কনস্যুল এর পরের মাসে জানায়, বন্দি কমিউনিস্টদের সেনাবাহিনী বেসামরিক লোকদের হাতে তুলে দিচ্ছে। এই বেসামরিক লোকদের মধ্যে ছিল সেকালের উগ্রপন্থী সংবাদপত্র প্রকাশক, গ্যাংস্টার, সন্ত্রাসী এবং উচ্চবিত্ত প্রভাবশালী মুসলিম পরিবারগুলো। এদের কাজই ছিল বিনা বিচারে বন্দিদের নির্দয়ভাবে হত্যা করা।

নানান উপায়ে খুন করা হতো তাদের। শিরোচ্ছেদ, গুলি করে বা পিটিয়ে মারা ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের জমি ও সম্পদ দখল করতো অত্যাচারীরা। পরে তাদের ধরে নেয়া হতো কার্যালয়ে, পক্ষান্তরে ‘কসাইখানা’য়। হত্যার পর মৃতদেহ গণকবর খুঁড়ে চাপা দেয়া হতো। অনেকগুলো নদীতে ফেলেও দেয়া হতো নির্দ্বিধায়।

কতিপয় সাংবাদিক ও প্রকাশকের কাজ ছিল এই বন্দিদের জবানি নেয়া। নির্দোষ হলেও শুধুমাত্র তাদের নাম ব্যবহার করে মিথ্যে খবর প্রকাশ করা হতো। কম্যুনিস্টদের খুনে জল্লাদ হিসেবে পরিচিত করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।

গণহত্যা ১৯৬৫-৬৭ সাল পর্যন্ত চললেও নিপীড়ন চলে আরও ৩২ বছর। সুহার্তোর একনায়কত্বের পতন ঘটে ১৯৯৮ সালে। এর মধ্যে দেশটি দুর্নীতি ও অত্যাচারের চারণভূমিতে পরিণত হয়। বিশেষত বামপন্থিদের উত্তরসূরিরা প্রকৃত বিচার পাওয়া তো দূরের কথা স্বাভাবিক জীবনধারণের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। প্রোপাগান্ডার ঝাণ্ডা আরও বেগবান হয় এই সময়ে। জনতার মনে কম্যুনিজমের প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টিতে একের পর এক সস্তা, পৈশাচিক সিনেমা নির্মিত হয়। এর ফলে দর্শক ধরেই নেয় বামপন্থার অনুসারীরা নির্দয় পিশাচ ছাড়া কিছু নয়।

এই শাসনামলেই কট্টর কিছু নিয়মের প্রবর্তন করে তারা। যেমন- নারীদের পুলিশ পদে আবেদন করতে হলে হলে কুমারীত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। অন্যদিকে বামপন্থিদের উত্তরসূরিরা উচ্চপদের সরকারি চাকরিতে সুযোগই পায় না। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতেও বৈষম্য চলে। অনেক উত্তরসূরি বিবাহের অনুমতি পর্যন্ত পায়না। শিক্ষা, চাকরি, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক-সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত এরা।

চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অমানবিক হত্যাযজ্ঞের কোন সুরাহা হয়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো গণহত্যার গোপন দলিল প্রকাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে ক্রমাগত তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে প্রত্যক্ষদর্শীর সংখ্যাও নগণ্য, কারণ একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা হয় সেসময়ে। এরপরেও যারা বেঁচে ছিলেন তাদের অধিকাংশই বন্দিশিবিরে নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন। সঙ্গত কারণেই এরা খুব একটা এগিয়ে আসেনি। এছাড়া হুমকি, অত্যাচার ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিকভাবে তাঁদের ভীতিকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে গত ৫৫ বছরে।

Facebook Comments
১৫ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি