সোহরাব হোসেন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যাঁরা নিরবে নিভৃতে মানুষের কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তার মধ্যে নিজের আনন্দ খুঁজে বেড়ায়। এরা অনেকটা প্রচার বিমুখ।
কখনও নিজেকে সমাজ সেবক দাবি করে গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনামেও তেমন একটা চোখে পড়ে না। শুধু মানব সেবার মহান ব্রত নিয়ে মোমবাতির মতো নিজেকে পুড়িয়ে আলো দিয়ে যাচ্ছে। এধরণের মানুষগুলো আমাদের বর্তমান সমাজে খুব দরকার কিন্তু এদের সংখ্যা খুব কম।
বলছিলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর সানাপাড়ার ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ আবু শামীম ভাইয়ের কথা। এই মানুষটাকে আমি গ্রীষ্মের তীব্র তাপদহের খা খা রোদ্দুর মধ্যে দিনের পর দিন খাল খননের জন্য বিলের মধ্যে কাজ করতে দেখেছি। বেতনা পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ষা মৌসুমের আগেই খাল খননের কাজ দ্রুত শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন। যাতে এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতায় কষ্ট না পায়।আজ দুপুরে হঠাৎ সুপারীঘাটা হয়ে কাটা খালী বিলের মাঝখানে। ভয়ংকর তীব্র অস্বস্তিকর সেই গরমে বিলের মাঝখানে পৌঁছাতে গিয়ে আমার গলদঘর্ম অবস্থা।প্রতিটি মিনিট যেন ঘন্টার মতো মনে হচ্ছিল। ঘন্টা খানেক ছিলাম আমি বিভিন্ন কথার ফাঁকে জিজ্ঞেস করছিলাম ভাই এতো গরমের মধ্যে কিভাবে কাজ করছেন? খুব সহজ উত্তর আর কদিন পর বর্ষাকাল,তার আগেই খাল খননের কাজ শেষ করতে হবে। তার সেই কথার মধ্যে আমি একটা অদ্ভুত রকমের বারুদ জ্বলতে দেখেছি।সেটা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার বারুদ ছিল।
সেই বারুদটাকে জ্বলতে দেওয়ার দরকার।মনে মনে ভাবলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমেদ মানুষ চিনতে ভুল করেননি। কারণ “রতনে রতন চেনে “। আমাদের বেতনা পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে মানুষের আস্থার প্রতিক হয়ে গেছে। তার সাহসী পদক্ষেপ ও সুপরিকল্পিত যথাযথ কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের ফলে এবছর বেতনা নদীর খনন কাজ শেষ না স্বর্ত্বেও গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর বেতনা পাড়ের জলাবদ্ধতা দ্রুত নিষ্কাসন হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কম হয়েছে। খাল খননের কাজ শেষ হলেও তার কাজ কিন্তু শেষ হয়নি। বর্ষা মৌসুমে স্লুইস গেইটের পাটা বন্ধ ও অকেজো থাকায় তীব্র ভারী বর্ষনের মধ্যে গেটের পাটা ঠিক করে পানি নিষ্কাসন নিশ্চিত করে। এবার এলাকায় আগেভাগেই জলাবদ্ধতা শেষ হওয়ার সাথে সাথে শেষ হয় এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলো। এবার কোমর বেঁধে লোকজন নিয়ে নেমেছেন গ্রামীণ জনপদের রাস্তা সংস্কারকাজ করার জন্য। আবু শামীম সানা একজন সাদা মনের প্রচার বিমুখ মানুষ।
তার এসব কাজগুলো তাকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগ থেকে যুগান্তরে। আর যে সমাজে গুণের সমাদর নেই সেখানে গুণী জন্মায় না,সুতরাং আমাদের সবাইকে গুণের সমাদর করার পাশাপাশি তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিৎ বলে মনে করি। যদিও আলোচনায় থাকলে সমালোচনাও থাকে। তবে একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে মনে করি আমাদের সমাজের জন্য আজকের দিনে আবু শামীম সানার মতো সাদা মনের মানুষের বড্ড বেশি দরকার। এভাবে আগামীতে তিনি আরও বেশি মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন বলে মনে করেন তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা।