জাহিদুল ইসলাম বেলাল,কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুৎতের জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে দুই থেকে তিন মাসে রিডিং স্পটে না গিয়ে মনগড়া বিল তৈরী, বিদ্যু ব্যবহারের চেয়ে বেশী রিডিং উঠিয়ে অতিরিক্ত বিল আদায়, টাকা জমা দেয়ার শেষ তারিখের পরে বিল কাগজ পৌঁছানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জোনালের আওতাধীন বেশীরভাগ গ্রাহকের এই অভিযোগ, রিডাররা বেশীরভাগ সময়ে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বিল তৈরী করেন। বিশেষ করে জুন মাস আসলেই তারা বেশীরভাগ গ্রাহককে রিডিংয়ের চেয়ে বেশী বিল তৈরী করেন নিজেদের টার্গেট পূরণ করার জন্য। সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে পরেন গ্রামের সাদামাটা মানুষ। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ দিনের পর দিন বিদ্যুৎ অফিসে হেঁটেও সমস্যার সমাধান মেলে না। তবে এই জোনালের ডিজিএম জানালেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনার আসল বিষয়টি জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শামিম হোসেন জানান, গত ৮ জুন আমার রিডিং উঠিয়ে নিয়েছে ৬ হাজার ৮১০ ইউনিট। ২০ দিন পর আমাকে বিল কাগজ হাতে দিয়েছেন অর্থাৎ ২৮ জুন। বর্তমানে আমার মিটারে ব্যবহৃত ইউনিট ৬ হাজার ৭৭৭ ইউনিট। ২০ দিন ব্যবহার করার পরও আমার ৩৩ ইউনিট মিটারের চেয়ে বেশী বিল করা হয়েছে।
আমার পূর্বের মাস অনুপাতে যদি হিসাব করি তাহলে তারা ব্যবহারের চেয়ে ১৫০ ইউনিটের বেশী বিল করেছে। তাদের এই মনগড়া বিল আর গাফেলতির জন্য সরকার কি তাদের বসিয়েছে? আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের সাথে এত বড় প্রতারণা কেন? এটা যে আমি একা তাই না এলাকার সবার এই অবস্থা। এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত।
চাপলী এলাকার ভুক্তভোগী মো. ফরিদ জানান, আমার ঘরে একটি লাইট এবং মাঝে একটি ফ্যান চলে। আগে বিল আসত ১’শত ২০ টাকা থেকে দেড়শ টাকার মধ্যে। এবার এসেছে ৯’শ টাকা। অথচ মিটারের রিডিং অনুযায়ী এত ইউনিট খরচ হওয়ার কথা নয়। তারা নিজেরা তিনমাসে বিল দেয় না আবার বিদ্যুৎ অফিস থেকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয় বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে জরিমানা যুক্ত করেও বিল পরিশোধে বাধ্য হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. সিফাতুল্লাহ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে অত্র জোনালের এজিএম মোতাহার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ছে।
তিনি আরও বলেন, ধুলাসারের কাউয়ার চর এলাকা নিয়ে বেশী অভিযোগ থাকায় সেখানের দায়িত্বে থাকা মিটার রিডার কাম-ম্যাসেঞ্জার মো. মোস্তাফিজুর রহমান হিমেলকে কারণ দর্শাণোর নোটিশের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার জবাব চেয়ে আগামি তিন কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও সেবা দেয়ায় বিলম্ব হওয়ার অন্যতম কারণ জনবল সংকট, আমরা চেষ্ঠা করবো যাতে এ ধরনের ভুল আর না হয় বলেও জানান।