দৈনিক শিরোমণি নিজস্ব প্রতিবেদ: সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছেন দলগুলো। কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার প্রথম বৈঠকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অধিকাংশ দল এসব ইস্যুতে কাছাকাছি মত দিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতভিন্নতা থাকলেও সেটিও সমাধানযোগ্য বলে মনে করছেন তারা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল, আস্থাভোট ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন বলে একমত হয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক দল। এ ছাড়াও সংসদের স্থায়ী কমিটিতে বিরোধী দল থেকে কতোজন সভাপতি হবেন সে বিষয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয় বৈঠকে। এক্ষেত্রে বেশির ভাগ দল ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমিটিতে বিরোধী দল থেকে সভাপতি করার ওপর মত দিয়েছে। বিদ্যমান স্থায়ী কমিটিগুলো ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রধানও বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব উঠে আসে বৈঠকে। অন্যদিকে বিএনপি বলেছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ৫টি ছাড়াও আরও কয়েকটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিরোধী দল থেকে দেয়া যেতে পারে। নিম্ন কক্ষে নারী আসন ২৫ শতাংশ করার পক্ষে বেশির ভাগ দলই মত দিয়েছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষে কারও মত আসেনি।গতকাল রাজধানীর বেইলী রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে সুনির্দিষ্ট চারটি বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে যে, আস্থা ভোট, অর্থ বিল ও সংবিধান সংশোধন ব্যতীত অন্যান্য সকল বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত ও ভোটদানের সুযোগ থাকা উচিত। জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে সংসদ সদস্যরা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না এ বিষয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই তিনটি বিষয়ের ওপর প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন মাস রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। সংসদের সকল স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ বিরোধী দলের হাতে দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে। কিছু মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে নিয়োগের বিষয়ে প্রায় সকল দল একমত পোষণ করেছে। কিন্তু কতোটি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি নিয়োগ করা হবে তা নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। পিছিয়ে পড়া নারী শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিতে বিশেষ বিধান করা উচিত বলে বিএনপি মনে করে। সংরক্ষিত আসনে নারী সংসদ সদস্য সংখ্যা ১০০ করার সুপারিশ করেছি। তবে নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।