1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

শারীরিক প্রতিবন্ধী, সাংসারিক নেতৃত্বের প্রায় চার যুগ

রাকিব হাসান আকন্দ, শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২
রাকিক হাসান আকন্দ, শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি: খর্বাকৃতির শারীরিক গঠন নিয়ে প্রায় চার যুগ সময় ধরে দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করছেন দুই সহোদর। কোনো প্রকার বিবাদ-কলহ ছাড়াই তারা জীবনের এসময়টুকু অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের পরিবারে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততির মধ্যে পারষ্পরিক বোঝাপড়ায়ও কোনো ঘাটতি দেখা দেয়নি। আর্থিক কষ্ট তাদের ছুঁতে পারেনি। এ বয়সে তাদের নিশ্চিত জীবিকার জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবস্থার আবেদন জানিয়েছেন তারা।গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংদিঘী (মুন্সীপাড়া) গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে নছু মিয়া (৬০) এবং রমিজ উদ্দিন (৫০)। জন্ম থেকেই তাঁরা খর্বাকৃতির হয়ে জন্ম নিয়েছেন।তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে নছু মিয়া ও রমিজ উদ্দিনের উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুট। একজন ৪৫ আরেকজন ৩৫ বছর আগে বিয়ে করেছেন। খর্বাকৃতির হলেও দুই ভাইয়ের দুই পরিবারের সদস্যরা এখনও তাদেরই সিদ্ধান্তে এবং নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নেতৃত্ব ও অনুসরণীয় গুণাবলী দুটোই রয়েছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির কঠিন সময়ে পরিবারের সদস্যরা উচ্চ শিক্ষিত না হলেও কেউ বিপথগামী হয়নি। চারিত্রিক এবং ব্যাক্তিগত আচার আচরণ এলাকার মানুষকে বিব্রত করেনি। এতেই সন্তুষ্ট খর্বাকৃতি দুই সহোদর।নছু মিয়া দুই ছেলেকে মানুষ করেছেন। সমাজের বিপথগামী অন্য যুবকের মাদক বা আদব-কায়দাবিহীন চলাফেরা নেই তার ছেলেদের। বাবার প্রতি বড় ছেলের ভালবাসা বেশি। দুটি ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করতে পারেননি। এতে তার কোনো আক্ষেপ নেই। সমাজের মানুষের কাছে ছেলেদের ভালো আচার-ব্যবহারের কথা শোনে তিনি খুব খুশি। কিন্তু সৎ পথে অর্থ উপার্জন করছে। দুই ছেলে ব্যাটারীচালিত ইজি বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্তমান সময়ে পরিবারের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে উপার্জন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। ফলে অনেকটা কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এতো কষ্টের মধ্যেও তিনি ভিক্ষা করতে চান না। বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে বাকি দিনগুলো আরাম আয়েশে কাটানোর ইচ্ছা পোষন করেন তিনি।রমিজ উদ্দিন (৫০) বলেন, মাঝে মধ্যে খুব অভাব অনটন দেখা দিলে এলাকার মানুষজন সাহায্য করেন। আগে এলাকার বাইরে বা রাজধানী ঢাকায় গিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। বিশেষ করে রমজান মাস, দুটি ঈদ, ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতেন। এ বয়সে সন্তানের একার উপার্জনে তাঁর সংসার চালাতে কষ্ট হয়। বেশ কয়েক বছর যাবত মানুষের কাছে হাত পাতেন না। ভিক্ষাবৃত্তি করতে চান না। তবে প্রত্যাশা করেন মানুষের সহায়তা পেলে কষ্টেসৃষ্টে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।নছু মিয়ার স্ত্রী কমলা রাণী বলেন, কষ্ট হলেও বেশ সুখেই সংসার জীবন অতিক্রম করছেন কমলা রাণী। ৪০ বছর আগে নছু মিয়ার সাথে জীবন জীবিকার যাত্রা শুরু করেন। এ সময়ে একটি ছেলে ও একটি কন্যা সন্তানের দম্পতি হন তারা। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও তাদের মধ্যে ভালোবাসা বা সুখের কোনো অভাব নেই। যাদের পরিবারে প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে সেই সব পরিবারের সদস্যদের প্রতিবন্ধীদের প্রতি যতœবান হওয়ার আহবান জানিয়েছেন কমলা রাণী। এতে পারিবারিক বন্ধন যেমন দৃঢ় হয় তেমনি প্রতিবন্ধী মানুষজন নিজেকে অন্য দশজন মানুষের মতো ভাবতে পারেন। সুস্থ্য স্বাভাবিক মনোবল নিয়ে বেড়ে উঠেন।রমিজ উদ্দিনের স্ত্রী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, বাবা-মা দেখেশুনে বিয়ে দিয়েছেন। যার সাথে বিয়ে দিয়েছেন তার সাথেই এখনও সংসার করছি। মায়া-মহব্বত, ¯েœহ-ভালবাসা সব অটুট রয়েছে। মানুষ বেঁটে হলেও মায়া-মহব্বত আছে বলেই ৩৫ বছর যাবত তাঁর সাথে সংসার করছি। কোনো সময় কোনো বিষয় নিয়ে বাদানুবাদ হয়নি।রমিজ উদ্দিন ও নছু মিয়ায় সহোদর ছোট ভাই চাঁন মিয়া বলেন, তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে দুই ভাই ছাড়া সবাই স্বাভাবিক। প্রতিবন্ধী হলেও তাদের ফেলে দেওয়া যাবে না। ভাই-বোনদের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তবে বয়স বাড়ার কারণে তারা এখন মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। বড় ভাইটার হাঁপানী রয়েছে। সমাজসেবা অফিস থেকে যে টাকা পায় তা দিয়ে ভাইদের চলা কষ্ট হয়।নছু মিয়ার ছেলে আইয়ুব আলী বলেন, বাবা-মায়ের ভরন পোষন চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক পরিবারে প্রতিবন্ধীদের প্রতি অন্য সদস্যরা রুষ্ট হয়। বাবা-মা’র সকল চাহিদা পুরণ করার চেষ্টা করছি।ওই গ্রামের স্থানীয় শিক্ষক সোলায়মান মোহাম্মদ বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই সহোদরেরা হলেও তারা কিন্তু তাদের পরিবারকে সুচারুরূপে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সন্তানদেরকে মানুষের মতো মানুষ করে আসছে। হয়তো সে অর্থে পড়াশোনা করাতে পারেনি। কিন্তু মানবিক মানুষ বলতে যা বুঝায় মানুষের সাথে বিশৃঙ্খলা বা ক্ষতি করেনি। তারা পরিশ্রম করে বড় হয়েছে। তারা প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। কিন্তু ওই ভাতায় তারা চলতে পারছে না। এরকম প্রতিবন্ধী যেসব পরিবারে রয়েছে সেসব পরিবারের সদস্যদের প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি সহানুভূতি থাকা উচিত।মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন বলেন, যাদের কর্ম নাই, চলাফেরা করতে পারে না এরকম হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকার বসে বসে বিক্রি করার জন্য দোকানের অনুদান দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা নছুমদ্দিন এবং রমিজ উদ্দিনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মন্জুরুল ইসলাম জানান, রমিজ উদ্দিন এবং নছু মিয়া এরা দুই ভাই। এদেরকে আমরা প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় নিয়ে এসেছি। দীর্ঘদিন ধরে ভাতাও পাচ্ছে তারা। চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস  প্রদান করেছি।
Facebook Comments
০ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি