1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন

আদিবাসী শব্দটি মানতে চায় না বাংলাদেশ সরকার

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২

শিরোমণি ডেস্ক রিপোর্ট: প্রতিবছর ৯ই জুন যখন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয় তখন বাংলাদেশ সরকার ”আদিবাসী” শব্দটি স্বীকারই করতে চায় না।

বাংলাদেশ সরকারের নীতি হচ্ছে – যাদের আদিবাসী বলা হচ্ছে তারা এখানকার আদি বাসিন্দা নয়। তারা হচ্ছে এ ভূখণ্ডের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী।

সম্প্রতি বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রণালয় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, গণমাধ্যমে যাতে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করা হয়।

এবারই প্রথম নয়। বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটির অস্তিত্বই স্বীকার করে না।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি ২০১১ সালে ঢাকায় বিদেশী কূটনীতিকদের আহবান জানিয়েছিলেন যাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ”ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর” জনগণকে যাতে ”আদিবাসী” বলা না হয়।

তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশী কূটনীতিকদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে বাঙালিরাই এখানকার আদিবাসী।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকদের তিনি অনুরোধ করেন যাতে ”আদিবাসী” শব্দটি ব্যবহার না করা হয়।সরকারের যুক্তি কী?

সরকারের অবস্থান হচ্ছে, এখানকার মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চার হাজার বছরের পুরনো। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা সেটিই প্রমাণ করে।

কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবারত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ১৬ শতকে মিয়ানমার এবং কম্বোডিয়া থেকে আসা শুরু করে।

সেজন্য তারা সেখানকার আদিবাসী নয় বলে সরকার মনে করছে।

সরকারের আরেকটি যুক্তি হচ্ছে, আদিবাসী হতে হলে কলোনিয়াল কিংবা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলোনাইজেশন হতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সে ধরনের কিছুই হয়নি।

অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকায় যাদের আদিবাসী বলা হয়, তাদের ক্ষেত্রে যে ধরনের পরিস্থিতি হয়েছিল বাংলাদেশে সে রকম কিছু হয়নি।

তাছাড়া ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত শান্তি চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘উপজাতি অধ্যুষ্যিত অঞ্চল’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সরকার বলছে, সে চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের নেতারা উপজাতি শব্দটি মেনে নিয়েছে।

জাতিসংঘের কোন দলিলে ‘আদিবাসীর’ সর্বসম্মত সংজ্ঞাও নেই বলে মনে করে বাংলাদেশ সরকার।

যে ঘোষণাপত্র ২০০৭ সালে গৃহীত হয়েছিল সেখানে ‘আদিবাসীদের’ অধিকারের কথা বলা হলেও ‘আদিবাসীদের’ কোন সংজ্ঞা দেয়া হয়নি।

বাংলাদেশ সরকারের ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গেজেটে দেখা যায়, বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ৫০টি। তাদের সবাই নিজেদের ”আদিবাসী” হিসেবে দাবি করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার নিয়ে গত কয়েক দশক ধরে সোচ্চার ইলিরা দেওয়ান।

তিনি এক সময় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মিস্ দেওয়ান বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিদের চেয়ে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও রীতি-নীতি আলাদা।

“সেদিক থেকে অবশ্যই আমরা আদিবাসী। কে আগে এসেছে কে পরে এসেছে সেটা বিষয় না।”

“আদিবাসী মানে হচ্ছে – মূলধারা থেকে যাদের ভাষা ভিন্ন এবং সংস্কৃতি ভিন্ন তাদেরকে আদিবাসী বলে। সে হিসেবে আমরা নিজেদের আদিবাসী হিসেবে দাবি করছি। “

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা উপজাতি শব্দগুলো বৈষম্য এবং বঞ্চনার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন বলছে, ১৯৯০’র দশকের শুরু থেকে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করা হতো। তখন আদি বাসিন্দা হিসেবেই এটি ব্যবহার হতো। কিন্তু সে সময় বিষয়টি নিয়ে সরকারগুলো এতোটা প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

কিন্তু যখন আদিবাসীদের অধিকারের বিষয়টি স্বীকৃতি দেবার জন্য জাতিসংঘে তোড়জোড় শুরু হয় তখন সরকারও নড়েচড়ে বসে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সালে যখন আদিবাসীদের অধিকারের বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেয় তখন ‘আদিবাসী’ প্রশ্নে সরকার আরো জোরালো অবস্থান নেয়।

আদিবাসী শব্দটি গত এক একযুগ ধরে সরকারের কাছে তীব্র স্পর্শকাতর এবং অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে জাতিসংঘের একটি ঘোষণাপত্র।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬১তম অধিবেশনে ২০০৭ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে একটি ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয়।

সেখানে ১৪৪টি দেশ এর পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ, ভুটান এবং রাশিয়া সহ ১১টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। এছাড়া আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। পরবর্তীতে এই চারটি দেশ তাদের অবস্থান বদল করে এই ঘোষণাপত্রকে সমর্থন দেয়।

সেই ঘোষণাপত্রে ১২টি ক্ষেত্রে আদিবাসীদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল জাতিসংঘ। যার মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত অধিকারগুলোই ছিল মুখ্য। সে ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে:

•ভূমি ও ভূখণ্ডের অধিকার

•আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি ও ভূখণ্ডের উপর সামরিক কার্যক্রম বন্ধের অধিকার

•তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ প্রক্রিয়া থেকে রেহাই পাবার অধিকার

•তাদের সম্মতি ছাড়া যেসব ভূমি, ভূখণ্ড এবং সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধার ও ফেরত পাবার অধিকার।

এই ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করার অর্থ হচ্ছে, এখানে যেসব বিষয় উল্লেখ করা আছে সেগুলো মেনে নেয়া এবং বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়া।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, “জাতিসংঘের ঘোষণায় স্বাক্ষর করার অর্থ হচ্ছে সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়া। তখন একটি বাধ্যবাধকতা এ

“ঘোষণা স্বাক্ষর করে সেটি বাস্তবায়ন না করলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়,” বলেন মি. কবির।

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশের বসবাস পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায়।

বাংলাদেশ সরকার মনে করে সীমান্ত এলাকা হওয়ায় নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সে এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতাও আছে।

ফলে জাতিসংঘের ঘোষণায় স্বাক্ষর করে ”আদিবাসীদের অধিকার” মেনে নিলে সামরিক তৎপরতাও সেখান থেকে গুটিয়ে নিতে হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব কারণেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের ঘোষণায় স্বাক্ষর করছে না এবং ”আদিবাসী” শব্দটিও মেনে নিচ্ছে না।

তবে বাংলাদেশ সরকার বলছে দেশের নাগরিক হিসেবে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ জনগণ যাতে তাদের অধিকার পায় সেটি তারা নিশ্চিত করছে। শিক্ষা এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তাদের বাড়তি সুবিধাও দিচ্ছে সরকার।  বিবিসি বাংলা

Facebook Comments
২ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি