সরকার এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক—এ দুই পক্ষের দায়িত্বহীনতায় দিন দিন গণপরিবহন অনিরাপদ হয়ে উঠছে বলে মনে করেন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিক সংগঠনে সরকারের লোক থাকে, তারা বেপরোয়া। বাসমালিকদের কাছে ইনকামই (আয়) শেষ কথা, বাসে কী হচ্ছে না হচ্ছে তা তারা দেখে না। হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত ২৪ জুলাই রাজধানীতে এক নারী শিক্ষার্থী বাসে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। বাস থেকে লাফিয়ে নিপীড়কের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু হলে শিক্ষার্থীকে নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত বাসচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই ধরনের ঘটনা ঘটছে চট্টগ্রামসহ দেশের অন্য মহানগরেও। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ বছরে গণপরিবহনে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৬ জন নারী। ঘটনার শিকার বেশির ভাগই গৃহবধূ ও কারখানার শ্রমিক।মহাসড়কে ডাকাতিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঠেকাতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, সক্ষমতা ও লোকবল অনুযায়ী বিভিন্ন মহাসড়কে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে ওই বছরের আগস্টের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। একটি নির্দেশনায় বলা হয়, গণপরিবহনে দৃশ্যমান দুটি জায়গায় চালক ও চালকের সহকারীর ছবিসহ নাম, চালকের লাইসেন্স নম্বর ও মুঠোফোন নম্বর প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু এ নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলা ১০টি বাসে গতকাল বৃহস্পতিবার উঠে দেখা যায়, কোনো বাসেই চালকের ছবিসহ লাইসেন্স, মুঠোফোন নম্বর দৃশ্যমান প্রদর্শন করা হচ্ছে না।