1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

আধিপত্যের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে যশোরের তৃতীয় লিঙ্গের লাভলী

জেমস রহিম রানা যশোর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
  • আপডেট : রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২

জেমস রহিম রানা যশোর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ আধিপত্যের দ্বন্দ্বে সহকর্মীদের যোগসাজসে খুন হয়েছে যশোরের তৃতীয় লিঙ্গের লাভলী। ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের জোর তৎপরতায় এই হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচিত হয়েছে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলি, বার্মিজ চাকু ও করাত কুড়ালসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা। হিজড়া সম্প্রদায়ের আধিপত্য বিস্তার, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আকাঙ্খা, অর্থনৈতিক লেনদেন ও পূর্ব বিরোধের জের হিসেবে লাভলীকে খুন করা হয়েছে বলে আসামীরা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ২৭ ও ২৮। তারিখ ০৯-০১-২২। গতকাল রোববার বিকেলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।জানা যায়, শনিবার সকালে যশোর শহরতলীর হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে রাস্তার উপর প্রকাশ্য ছুরিকাঘাতে তৃতীয় লীঙ্গের লাভলী খুন হয়। লাভলী আকতার (৩০) শহরের বেজপাড়া চিরুনিকল এলাকার মৃত আব্দুল করিম বিশ্বাসের মেয়ে ও ধর্মতলা মোড়ের ফারুক হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। এঘটনায় বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী বিকেলে ধর্মতলা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে।পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, শনিবার সকাল ৮টার দিকে লাভলী হিজড়া তার অপর দুই সহযোগি হিজড়া সেলিনা ও নাজমার সাথে ধর্মতলা মোড় থেকে অটোরিক্সা যোগে কায়েমকোলা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তারা যশোর ছুটিপুর সড়কের হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে মাঠের মধ্যে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আগে থেকে রাস্তার উপর ওৎ পেতে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দোগাছিয়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে শাকিল পারভেজ (২১) ও ঝাউদিয়া গ্রামের শাহাজুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯) তাদের গাড়ি থামিয়ে দেয় এবং তাদের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে লাভলীকে গুলি করে। কিন্তু গুলি লক্ষভ্রষ্ট হওয়ায় শাকিল পারভেজের হাতে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে লাভলীর মুখের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং গলায় পোঁচ দিয়ে রক্তাক্ত করে মোটরসাইকেল যোগে চলে যায়। এসময় তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়।পুলিশের হাতে আটক এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী নাজমা ও সেলিনা জানায়, নাজমা ও সেলিনা লাভলীর সহযোগি। তারা যশোর শহরের ধর্মতলায় থেকে হিজড়া সরদার পান্জারির অধীনে এক সাথে ছিলেন। কিন্তু তাদের মতের মিল না হওয়ায় সম্প্রতি তারা তিনজন পান্জারির থেকে আলাদা হয়ে যান। এনিয়ে পান্জারি ও তার অনুসারীদের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এই সুযোগে নাজমার কথিত স্বামী জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দল গঠনের লক্ষ্যে নাজমা, সেলিনা, জিয়াউর রহমান, তার ছেলে শাকিল পারভেজ ও মেহেদী হাসান পরিকল্পনা শুরু করে। কিন্তু লাভলী নিজ বিচক্ষনতা সেই পরিকল্পনায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এরপর তারা লাভলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষে শনিবার সকালে নাজমা ও সেলিনা লাভলীকে সাথে নিয়ে গ্রামে গ্রামে শিশু নাচানোর কথা বলে ধর্মতলা মোড় থেকে অটোরিক্সা যোগে কায়েমকোলা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তারা হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পনা মতো মুখে মাস্ক পরে বসে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দোগাছিয়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে শাকিল পারভেজ (২১) ও ঝাউদিয়া গ্রামের শাহাজুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯) তাদের গাড়ি থামিয়ে দেয় এবং তাদের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে লাভলীকে গুলি করে। কিন্তু গুলি লক্ষভ্রষ্ট হওয়ায় শাকিল পারভেজের হাতে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে লাভলীর মুখের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং গলায় পোঁচ দিয়ে রক্তাক্ত করে। এসময় লাভলী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাভলীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।এদিকে রক্তাক্ত লাভলীকে হাসপাতালে আনার পথে নাজমা ও সেলিনার পুর্ব পরিকল্পনা ফাঁস হতে পারে এমন আশংকায় তাদের মোবাইল ফোন কারবালা পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবং তাদের মোবাইল ছিনতাই হয়েছে বলে প্রচার করে। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে লাভলীর দুই সহযোগিকে ডিবি অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা তাদের পরিকল্পনার কথা স্বীকার পূর্বক হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে দেয়। এই সূত্র ধরে পুলিশের একটি চৌকস দল ব্যাপক অভিযান চালিয়ে দোগাছিয়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে শাকিল পারভেজ (২১) ও ঝাউদিয়া গ্রামের শাহাজুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯)কে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বার্মিজ চাকু, একটি বিদেশী পিস্তল, একটি করাত কুড়াল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, তিন রাউন্ড গুলির বুলেট ও দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।নিহতের ভাই আব্দুল খালেক জানান, আমার বোন তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ায় দীর্ঘদিন পরিবার থেকে আলাদাভাবে থাকতো। তার কাছ থেকে অনেকেই টাকা পয়সা ধার নিয়ে চলতো। এইসব লেনদেনের পাশাপাশি হিজড়া সম্প্রদায়ের আধিপত্য বিস্তার, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আকাঙ্খা, অর্থনৈতিক লেনদেন ও পূর্ব বিরোধের জের হিসেবে আমার বোন লাভলীকে খুন করা হয়েছে। আমি এই খুনের সাথে জড়িত দুবৃত্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।এদিকে নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ধর্মতলা এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। আরবপুর ইউনিয়নবাসির ব্যানারে হাজার হাজার মানুষ লাভলীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে এই হত্যাকান্ডের মোটিভ উদ্ধারসহ খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে ধর্মতলা মোড়ে মানব বন্ধন করে। এসময় ইউনিয়নের সকল শ্রেনী পেশার মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং ঘটনার বিচার দাবি করে।

Facebook Comments
no views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি