বাচ্চু মল্লিক,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি:নেশা যার বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি। একের পর এক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ট্রান্সফরমার চুরি করতে গিয়ে বাম হাতটি উড়ে যায় সাইফুল শরিফের। সুস্থ হয়ে আবারো সক্রিয় হয়েছেন তার পূরানো পেশায়, তবে এবার ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছেন সাইফুল। এলাকায় সন্ত্রাসী কবির হোসেনকে সাথে নিয়ে বাহিনী গঠন করে শুরু করেছে গরু চুরি, মৎস্য খামার দখল এবং মাছ লুটসহ বিভিন্ন অপকর্ম। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কয়েক বছর আগে রামপাল থানা থেকে
রামপাল থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ। লুটপাট ও সন্ত্রাসী অপরাধ কর্মকান্ডে এলাকায় হয়ে উঠেছেন বেপরোয়া। তাদের রুখবে এমন সাধ্য কার? তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার ভোজপতিয়া ইউনিয়নের কালিকাবাড়ি এলাকার ফেরদাউস শরীফের ছেলে সাইফুল শরিফ এবং মৃত সাঈদ আলী হাওলাদার এর ছেলে কবির হাওলাদার বর্তমানে ওই এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক। সাইফুল শরীফের নামে তিন বছরের একটি সাজার ওয়ারেন্ট ও কয়েকটি অভিযোগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাকে ধরছে না। ৫ ই আগস্ট এর পরে দোকান চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত কবির হাওলাদার ও তার বাহিনীর কাছে যেতে ভয় পাই পুলিশ।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ৫ই আগস্ট এর আগে একই এলাকায় আওয়ামী লীগের বিশেষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিল সাইফুল ও কবির। মৎস্য খামার এবং এলাকায় প্রতিপক্ষ মোকাবেলা করতে তাদেরকে বিএনপি’র রাজনীতিতে যুক্ত করেন উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের নেতারা। তাদের আশীর্বাদ পাওয়ায় ঘের দখল, বাড়ি দখল, মাছ লুট, বাড়িতে আগুন দেওয়া, প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হাত-পা ভাঙ্গা সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে এই বাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ই আগস্টের পর স্থানীয় তাজুল হাওলাদার, মোস্তাফিজ মৃধা, মাইনুল ইসলাম হিরক, সাইফুল ইসলাম, দুলাল হাওলাদার সহ অনেকের মৎস্য খামার থেকে থেকে মাছ লুট করেছে এই সাইফুল বাহিনী। নায়েক মৃধা নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করে তাকে আহত করেছে। অহিদুল সরদার নামের এক ব্যক্তির ছাগল ভেড়া লুট করে নিয়ে গেছে। এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তর, রামপাল থানা, রামপাল উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর একাধিক অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ দিয়ে এলাকায় ফিরে আসলে শুরু হয় তাদের উপর নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি। তাছাড়া গোয়াল থেকে গরু, ঘের থেকে মাছ লুট হয়ে যায়।। ভয়ে সংবাদ কর্মীদের কাছেও মুখ খুলতে সাহস দেখাননি অনেক ভুক্তভোগী।
স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও এলাকাবাসীর জান মালের নিরাপত্তায় দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত সাইফুল, কবির ও তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।