জাহিদুল ইসলাম বেলাল, কুয়াকাটা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা বিশ্বনন্দিত পর্যটন নগরী বেড়াতে এসে নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। মূলত হোটেল মার্কেটিংয়ের নামে গড়ে ওঠা একটি অসাধু দালাল চক্র এবং কিছু অটোচালকের প্রতারণায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন তারা।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা চৌরাস্তা ও ঘাটলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকাগুলোতে দালালদের সরব উপস্থিতি। তারা বিভিন্ন হোটেলের নাম করে পর্যটকদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। পর্যটকরা বাস থেকে নামার পরপরই শুরু হয় হোটেল কার্ড ধরিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতা।
বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যাত্রীবাহী বাসগুলো কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে না এসে তুলাতলী বাস স্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়, যা দালাল চক্রের জন্য সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়। তখন অটোচালক ও দালালরা মিলে হোটেলে নেয়ার নামে পর্যটকদের মালপত্র জোর করে উঠানোর চেষ্টা করে এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে হয়রানি করে।
রাজশাহী থেকে আগত পর্যটক বিমল মজুমদার বলেন, এত লম্বা ভ্রমন শেষে একটু দাঁড়িয়ে রিলাক্স নেয়ার সুযোগও পেলাম না, এরই মধ্যে চার-পাঁচটি হোটেলের কার্ড নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিলো। অটো চালকেরা বিভিন্ন হোটেলের নাম বলে মালামাল তুলে নিতে চাইছিলো। তাদের লাভ কোথায়?
মাদারীপুর থেকে ঘুরতে আসা দম্পতি নাবিল ও নুসরাত বলেন, আমরা সৈকতের কাছাকাছি একটি হোটেলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এক অটোচালক নানা অফার দিয়ে ভিতরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। সন্দেহ হলে আমরা অন্য গাড়িতে উঠি। এভাবে পর্যটকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন ও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। বিষয়টি দেখা উচিত।
হোটেল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, কিছু অসাধু হোটেল মালিক নিজের স্বার্থে এই চক্রকে মদত দিচ্ছেন। এমনকি অনেক হোটেল মালিক মাসের 'সেরা গেস্ট দাতা' পুরস্কার ঘোষণা করে অটোচালকদের উদ্বুদ্ধ করছেন বেশি পর্যটক টানতে। এতে অটোচালকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা।
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, হোটেল ব্যবসায়ীরা এখন দালাল সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। অটোচালক ও দালালদের কারণে পর্যটকদের ২০-২৫ শতাংশ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। পর্যটকদের অনুরোধ করবো কুয়াকাটা চৌরাস্তা নেমে নিজের পছন্দমতো হোটেল বেছে নিতে। এতে করে ভালো ডিসকাউন্ট ও কম ভাড়ায় রুম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অন্যদিকে কুয়াকাটা ইজি বাইক মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান বলেন, গেস্ট দিলে হোটেল থেকে আমাদের কমিশন দেয়। তবে যদি কেউ পর্যটকদের বিভ্রান্ত করে হয়রানি করে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম বলেন, হোটেল মার্কেটিংয়ের নামে পর্যটক হয়রানি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। খুব শীঘ্রই মোটরবাইক ও ইজিবাইক চালকদের নিয়ে বৈঠক করবো। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]