স্কটিশ পার্লামেন্টের বাংলাদেশ বিষয়ক ক্রস-পার্টি গ্রুপ (সিপিজি) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় জরুরি আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় মানবিক পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতি ঘটছে বলে বৈঠকে আলোচকরা জানান।
মঙ্গলবার এডিনবার্গে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন এমএসপি ফয়ছল চৌধুরী ।
মাইলস ব্রিগস জানান, সম্প্রতি ইউএসএইড-এর অনুদান হ্রাসের ফলে শিশুদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক সেবাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। তারা বলেন, “সংকট যেন ভুলে না যাওয়া হয়—এটা নিশ্চিত করতেই আমাদের এই আয়োজন।”
ম্যানচেস্টারে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন বৈঠকে উপস্থিত থেকে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে গত আট বছর ধরে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে রয়েছে।” তিনি নতুন হাইকমিশনার আবিদা ইসলামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সদিচ্ছা তুলে ধরেন।
অ্যাকশনএইড ইউকে-এর পক্ষ থেকে মারুফ মোহাম্মদ শহাব ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জানান, ২০২৪ সালে কক্সবাজারে ৯ লাখের বেশি মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে তারা। তবে ২০২৫ সালের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা (জেআরপি) এখনো ৪৩% অর্থায়িত—যা শিক্ষাসহ বহু জরুরি খাতকে হুমকিতে ফেলেছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির লন্ডন অফিস পরিচালক জেরালডিন ও’ক্যালাঘান বলেন, “তহবিল সংকটের কারণে খাদ্য রেশন কঠোরভাবে কমাতে হয়েছে, ফলে অপুষ্টি ও অনাহারের ঝুঁকি বাড়ছে।” তিনি দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
নিউক্যাসলের সাবেক লর্ড মেয়র কাউন্সিলর রহমান হাবিব যুক্তরাজ্যের প্রথম রোহিঙ্গা স্মৃতিস্তম্ভ ‘রোহিঙ্গা মেমোরিয়াল স্টোন’-এর ঘোষণা দেন, যা ব্র্যাডফোর্ডে ২৫ আগস্ট উন্মোচন করা হবে। সিপিজি আহ্বায়করা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকের শেষভাগে স্কটিশ বাংলাদেশি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা, এবং যুব নেতৃত্ব নিয়ে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
সিপিজি আশাবাদ ব্যক্ত করে যে, স্কটল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যকার অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় একটি টেকসই ও মানবিক পথ অনুসন্ধান করা সম্ভব হবে।
Notifications