সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় করতোয়া নদীতে আবারো শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। গত এক সপ্তাহে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী গ্রামের পাশের ফসলী মাঠের অন্তত ২৫ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে,
পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গনের মাত্রাও বাড়ছে। ফলে এই এলাকার বাসিন্দারা উদ্বিঘ্ন হয়ে পড়েছেন।
গেল বছর বর্ষা মৌসুমে একই এলাকায় নদীতে ভাঙ্গন শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এখানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রনে আনে,
এবছর জিও ব্যাগ ফেলার স্থানেও আবারো নদী ভাঙ্গতে শুরু করেছে।
আর এতে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে ফসলী জমি। স্থানীয় লোকজন বাঁশের প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে তার ভেতর কচুরিপানা ফেলে নিজেরা ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করছেন, কিন্তু কাজে আসছে না তাদের এ প্রচেষ্টা।
উল্লাপাড়ার বেতবাড়ি গ্রামের এনামুল হক, শফিকুল ইসলাম ও আশরাফুল ইসলাম জানান, গেল বছর তাদের গ্রামের পাশে করতোয়া নদীতে ব্যাপাক ভাঙ্গন শুরু হলে অনেকগুলো বাড়ি ও ফসলী জমি নদীতে ভেঙ্গে যায়,
এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিরাজগঞ্জ অফিস থেকে ভাঙ্গন রোধে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু এবছর জিও ব্যাগ ফেলার স্থানসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আবারো ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে নদীর ভাঙ্গনে অন্ততঃ ২৫ বিঘা ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে,
পূর্বসাতবাড়ীয়া গ্রামের গ্রামের আবু তাহের জানান, গেল বছর বর্ষা মৌসুমে করতোয়ার ভাঙ্গণে তার বসত বাড়ী নদীর মধ্যে চলে গেছে, এবছর ইতোমধ্যেই দেড় বিঘা ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
বেতবাড়ী গ্রামের সরোয়ার মুন্সী জানান, এবছরের ভাঙ্গণে তার প্রায় দুই বিঘা ফসলী জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙ্গণ কবলিত স্থানে তার আরো জমি রয়েছে। ভাঙ্গণ রোধ না করা গেলে তার সর্বনাশ হয়ে যাবে বলে আশংকা ব্যাক্ত করেন তিনি,
এদিকে স্থানীয় লোকজন নদীর ভাঙ্গন রোধে স্বেচ্ছা ভিত্তিতে বাঁশের প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে ভেতরে কচুরিপানা ফেলছেন।
কিন্তু তাদের এ প্রচেষ্টা সফল হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে ভুক্তভোগীদের। এরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে করতোয়ার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন,
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, প্রায় দু’বছর ধরে বেতবাড়ী গ্রামের পাশে করতোয়া নদীতে ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে।
এবছর গ্রামের লোকজন ভাঙ্গণ কবলিত স্থানে নিজেরা বাঁশ ও কচুরিপানা দিয়ে ভাঙ্গণরোধের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, এতে তিনিও সহযোগিতা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এখানে ভাঙ্গণরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এই গ্রামের লোকজনের প্রচুর সম্পত্তি নদীতে চলে যাবার আশংকা রয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি অবহিত হয়েছেন। দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
no views