আব্দুল খালেক,রৌমারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:মা ইলিশ ধরব না, দেশের ক্ষতি করব না’ এই স্লোগানে মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে রৌমারী উপজেলা বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রশাসনের আয়োজনে এ চাল বিতরণ করা হয়। এ সময় চাল বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পেশাজীবী বহু জেলে। ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলেরা অভিযোগের সঙ্গে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রতিজন দরিদ্র জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এ চাল বিতরণে অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব এবং স্বজনপ্রীতি হয়েছে। প্রকৃত দরিদ্র জেলেরা নামের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। যারা জেলে নন ও স্বাবলম্বী পরিবার তাদের নাম তালিকায় উঠে এসেছে। এমনকি অনেকে ইতালি, সৌদি আরব, কাতার, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছে। এছাড়া, অনেকে আবার অন্য পেশায়ও নিয়োজিত হয়েছেন তাদের নামও এই তালিকায় রয়েছে। তবুও তারা পাচ্ছে ভিজিএফের চাল। এছাড়া, জেলেরা আরও অভিযোগ করে বলেন, তালিকায় জেলেদের নাম আছে, কিন্তু চালের কার্ড দেওয়ার সময় কোনো প্রকার যাচাই-বাচাই না করেই বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার মনগড়া জেলেদের নাম দিয়েছেন। এতে করে সরকার নির্ধারিত সহায়তা থেকে প্রকৃত ও হতদরিদ্র জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান তারা।জেলে বাতেন বলেন, আমি সারা বছর মাছ ধরে সংসার চালায়। এখন মাছ ধরা বন্ধ আমি চলব কীভাবে। সরকার থেকে বলেছে, চাল দেবে। কিন্তু এখন আমাকে বলতেছে চাল দেবে না। তালিকায় দেখা যায় স্বজন প্রীতি সচ্ছল পরিবার মৃত ব্যক্তির নাম তালিকায় আনা হয়েছে তারা মানুষ দেখে দেখে নামের তালিকা করেছে। অন্য জেলেরা যদি চাল পায় তাহলে আমারও তো চাল দরকার। আমিও তো জেলে তাহলে আমাকে কেন চাল দেবে না।
আরেক জেলে আব্দুর রহমান বলেন, আমি ছোট কাল থেকে এই পেশায় আছি। আমার সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস নদী থেকে মাছ ধরেই । তবুও আমি কেন কোনো সহায়তা পাব না। ‘আজ সরকার চাল দিতাছে সবাই পায়তাছে কিন্তু আমার জেলে কার্ড থাকা সত্ত্বেও নামের তালিকায় নাম না থাকায় চাল দেই নাই।’
এছাড়া আরেক জেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, অনেক জেলেদেরা বিভিন্ন দেশে ভালো পজিশনে আছে। তাদের নাম তালিকায় রয়েছে। অনেকে আজ চাল নিতেও এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়
রৌমারী উপজেলার মৎস্য অধিদপ্তরের দালাল মাজুম হোসেন চাউলের নাম দেওয়ার কথা বলে ২০০/৩০০ টাকা নেন।এই এলাকার জেলেদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বন্দবেড় ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন মাজুম সহ কয়েক জনকে তালিকা করার জন্য দায়িত্ব দিয়ে ছিলাম , আমি শুনছি এই তালিকায় প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তি ও অসচ্ছল পরিবারে চাল পেয়েছে। প্রয়োজনীয় চাল ফিরিয়ে আনা হবে।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উম্মে হোসনেআরা বলেন, আমি শুনেছি প্রবাসী ও মৃত ব্যাক্তি চাউল পেয়েছে তাদের চাল ফেরৎ নেওয়া হবে। এবং ২০ টাকা করে চেয়ারম্যান নিয়েছে সেটা নেওয়া হবে না আর মাজুম নামে কাউকে চিনিনা।
সারাদেশব্যাপী মা ইলিশ রক্ষাতে( ৯) অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, আহরণ সকল কিছু নিষিদ্ধ। এই উপজেলায় যে সকল জেলেরা ইলিশ মাছ আহরণের সঙ্গে জড়িত তাদের সরকার মাসিক ভিত্তিতে রৌমারী উপজেলার ভেতরে জেলে কার্ড অনুযায়ী তালিকার মোট ৮৫০ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। বন্দবেড় ইউনিয়ন ২৫০ টা বাকি পাচ ইউনিয়ন ৬০০ টা, যেন তারা ইলিশ মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকে। কিন্তু তারা নদীতে অন্যান্য মাছও আহরণ করতে পারবেন বলে জানান তিনি ।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]