কয়েকদিন আগে নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চেই হামলার শিকার হন স্যাটানিক ভার্সেস-এর বিতর্কিত ও মুসলিম বিশ্বে সমালোচিত লেখক সালমান রুশদি। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাকিস্তান থেকে হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরীন। ভারতের সংবাদমাধ্যমে জি নিউজকে তিনি বলেছেন, আমি এটা আশা করিনি। বাংলাদেশ থেকে ফতোয়া জারি হয়েছে আমার মাথার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারত থেকেও হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী অধ্যুষিত জায়গা থেকে আমার নামে ফতোয়া জারি হবে তা আমি ভাবতে পারিনি। ওখানে দেখলাম কিছুদিন আগে একটি ধর্মীয় সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা খাদিম হুসেন ঋদ্ধি একটি ব়্যালিতে প্রকাশ্যে বলেছে যে, সালমান রুশদি ও তসলিমা নাসরিনকে হাতের কাছে পেলে আমি নিজেই তাদের খুন করতাম। বলেছে যে ওরা নবী নিয়ে এত বাজে কথা বলেছে যে ওদের খুন করতেই হবে। তিনি আরও বলেন, ওই ভিডিও প্রচারের পর ব়্যালিতে যে লাখ লাখ মানুষ ছিল তাদের মনে হয়েছে যে সত্যিই আমাদের খুন করতে হবে। ইতোমধ্যেই সালমান রুশদিকে হামলা করা হয়েছে। এবার বাকি আমি। এরপর থেকে টুইটারে পাকিস্তান থেকে হুমকি পেয়ে চলেছি। তোমাকে মারা সহজ হবে, এসব বলছে। সবার প্রোফাইল দেখেই বোঝা যাচ্ছে এরা সন্ত্রাসবাদী বা সন্ত্রাসবাদ সমর্থনকারী। সবাই খুব খুশি যে সালমান রুশদিকে হামলা করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে বা ভারতে মাথার দাম ঘোষণা করায় আমি বিশেষ উদ্বিগ্ন ছিলাম না। তবে এখন আমি উদ্বিগ্ন। কারণ এরা সরাসরি পাকিস্তান থেকে হুমকি দিচ্ছে। তাহলে কবি-সাহিত্যিকরা তাদের মত প্রকাশ করবেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে তসলিমা বলেন,নিশ্চয় করবেন। তবে ইসলামের সমালোচনা দেখলে প্রকাশকরা ছাপাতে চায় না। নিউজপেপার ও ম্যাগাজিনগুলোও ছাপাতে চায় না, লেখায় কাঁটছাট করতে বলে। আমি মত প্রকাশ করতে চাই, কিন্তু আমার মতপ্রকাশে বাধা দিচ্ছে প্রকাশনা সংস্থা, মিডিয়া সংস্থার এডিটররা। আমি কীভাবে প্রকাশ করব? ফেসবুক ও টুইটারেই মতামত জানাতে পারি কিন্তু আজকাল সোশ্যাল মিডিয়াও আটকে দিচ্ছে, ব্যান করে দিচ্ছে। কেউ ইসলামের সমালোচনা করতে চায় না। কিন্তু আমার বক্তব্য, সমালোচনা না করলে একটা সমাজ কীভাবে এগোবে? ইসলামে এই যে নারী পুরুষের ভেদাভেদ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, গণতন্ত্র নেই।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]