
 মোশারফ হোসেন লিটন  সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ধোপাজান চলতি নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে পাড় কাটার মহোৎসব। রাত হলেই চলে এ তান্ডব লীলা। প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ছাড়া সবাই বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করছেন। এর ভাগ পাচ্ছেন অনেকেই। নি¤œপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই রাতের আধারে চালানো হয় পাড় কাটার মহোৎসব। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে রাতের আঁধারে চালানো হয় এসব অবৈধ কর্মকান্ড। সুত্র জানায়, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলাধীন চলতি নদীর আদাং, ডলুরা, রামপুর, জিনারপুর, রতারগাও সদর উপজেলাধীন কাইয়ারগাও, ডলুরা, ফেনিবিলসহ কয়েকটি গ্রামে নদীর পাড় কাটা চলে রাতের আধারে। তবে এসব বিষয়ে মাঝে মধ্যে দুএকটি বালি ভর্তি নৌকা আটক করলেও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই চলে এসব কর্মকান্ড। প্রতি রাতে ৫০-৮০টি ড্রেজার মেশিন বসানো হয় নদীর দুতীরে। এসব মেশিনের শব্দে আশপাশের সাধারন মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। সেই সাথে আশপাশের ফসলী জমিও বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে না পারলেও অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। এই চক্রটি প্রশাসনসহ কিছু কিছু সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়েও ধ্বংশ করছেন ধোপাজান নদীকে। জিনারপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আমাদের করার কিছুই নেই। নদীর পাড় কাটার ফলে আমাদের ফসলী জমি ও বাড়ীঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে কথা বললেই আমরা বাড়ীতে শান্তিতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঘুমাতে পারব না। পুলিশের অসৎ কর্মকর্তাদের দিয়ে আমাদের নানানভাবে হয়রানী করা হয়ে থাকে। বালিখেকো সিন্ডিকেট চক্রটি স্থানীয় পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ ও ডিবি পুলিশকে ম্যানেজ করেই চালায় এ তান্ডবলীলা। সুত্র আরও জানায়, প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তাদের কিছু সদস্য প্রত্যেক নৌকা ও ড্রেজার থেকে প্রতি রাতের জন্য ৫-৭ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন। সুনামগঞ্জ টুকেরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে শুনেছি। নৌ পুলিশ এসপি মহোদয়কে অবহিত করে অভিযানে যেতে পারি।বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিউর রহিম জাদিদ জানান, আমি প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে নৌকা আটক করছি কিন্তু রাতে অভিযান পরিচালনা করা খুবই কঠিন। আমাদের নিজেদের সিকিউরিটির ব্যাপারও আছে। বালি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নৌ পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার সম্পা ইয়াসমিনের সরকারী মোবাইল নম্বরে রাত সাড়ে ৯টায় বার বার কল দিলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান বিপিএম জানান, বালি সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। ধোপাজান চলতি নদীতে রাতের আধাঁরে ড্রেজার বসানোর খবর আমিও পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ধোপাজান চলতি নদীতে রাতের আধাঁরে ড্রেজার মেশিন বসানোর খবর পেয়েছি। তবে গভীর রাতে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে পাঠাতে তার সিকিউরিটির বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়। এই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনসহ অভিযান চালানো হবে। এ চক্রটিকে কোনভাবে থামানো যাচ্ছে না।
                     
                    
                    
                    
	
				
		no views