মোঃ রেজাউল ইসলাম, ময়মনসিংহ:মহান মে দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ সংহতি সমাবেশ করেছে। আজ বিকাল ০৫ ঘটিকায় ময়মনসিংহ নগরীর শহীদ ফিরোজ জাহাঙ্গীর চত্বরে এই সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংহতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্বের এই যে আধুনিক রুপ তা শ্রমিকের ঘামের ফসল। কিন্তুু শ্রমিকের অবস্থান আজ কোথায়? অবস্থান সেখানেই যেখানে অতীতেও ছিল। আজও শ্রমিক নির্যাতিত-নিষ্পেষিত, আজও শ্রমিক দারিদ্রের করালগ্রাসে জর্জরিত। পাচ্ছে না সে তার ন্যূনতম বেঁচে থাকার মৌলিক উপকরণগুলো। যা তার প্রাপ্য। পাচ্ছে না তার জীবনের নিরাপত্তা। তাকে মরতে হয় দালানের চাপায় পড়ে, না হয় আগুনে পুড়ে। স্বাভাবিক মৃত্যুটাও যেন তাদের কাছে অধরা। বেঁচে থাকার তাগিদে ‘শ্রমিক’ নাম ধারণ করে আর বাড়ী ফিরে দালান চাপা ও আগুনে পোড়া লাশ হয়ে। ক’দিন হৈচৈ হয়। আশ্বাস আর আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি আসতে থাকে। তারপর? তারপর সবাই নিশ্চুপ। আমরা সবাই ভুলে যাই। ভুলে যায় না শুধু স্বজনহারা মানুষগুলো।
বক্তারা বলেন, বাস্তব বিবর্জিত অতি নিম্ন মজুরীর কারণে শ্রমিকদের দিনাতিপাত করতে হয় ক্লায়ক্লেশে। বেঁচে থাকার সাধারণ চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে না। তাই করতে হয় মানবেতর জীবনযাপন। যেখানে খাবার ও মাথা গোছার ঠাঁইয়ের জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়, সেখানে সন্তান-সন্ততিদের লেখাপড়া করানোর আশা করতে পারে না। ফলে শ্রমিকের সন্তানটি শিক্ষা বঞ্চিত হয়ে বেড়ে উঠে আগামীর শ্রমিক হয়ে। বংশপরম্পরায় তৈরি হতে থাকে শ্রমিক।
বক্তারা আরো বলেন, শ্রমিকের অধিকার দেখভাল করার জন্য রয়েছে আইএলও ( International Labour Organization) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, রয়েছে দেশীবিদেশী এনজিও, রয়েছে দেশীবিদেশী শ্রমিক সংগঠন। সর্বোপরি, রয়েছে শ্রম আদালত সহ সরকারী দপ্তর সমুহ। শ্রমিকদের মাথার উপরে এত অভিভাবক থাকলেও তাদের জীবনধারা বিশ্বব্যাপী অতীতেও যেমন ছিল আজও তেমনি রয়েছে। এর উত্তর কি? আসলে দেখার অর্থে দেখার কেউ নেই। শ্রমিক শ্রেণীকে মনে রাখতে হবে, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। কেউ তা ঘরে এসে দিয়ে যায় না। এটা ঐতিহাসিক সত্য। কোন শ্রেণীকে তার অধিকার নিজেদেরকেই অর্জন করতে হয়। এটা দান খয়রাতের বিষয় নয়। অতীতেও শ্রমিকের অধিকার বিষয়টি যে তিমিরে ছিল আজও সে তিমিরেই আছে। এজন্য লড়াইয়ে সরব থাকতে হবে। সচেতন হতে হবে, সংগঠিত হতে হবে। সমস্বরে আওয়াজ তুলতে হবে। ‘মে দিবস’ এর দিনেই শুধু নয় আওয়াজ দিতে হবে সারাবছর। তা সে যে দেশেরই শ্রমিক হোক। কারণ, সবদেশের শ্রমিকের সমস্যা ঐ একটাই, তা হলো অধিকার পাওয়া না পাওয়া। বিষয়টি যে শ্রেণীগত।
সংহতি সমাবেশে সমাজ রূপান্তরের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রেজাউল ইসলাম আকাশ, সৈয়দ আরমান হোসেন ইমন, আবু সাইফ মুহম্মদ সাইফুল্লাহ, মো: নুর আলী চিশতি, মোহাম্মদ মাসুদ, বাসুদেব সাহা সৌরভ, রায়হান আকন্দ হৃদয় প্রমূখ।
Notifications