শাহাবাগ থানা প্রতিনিধি, দৈনিক শিরোমণি:স্মারক ম্যুরাল বিজয় স্মরণীতে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’- ভেঙে ফেলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি-(এম)
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড এম এ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাহিদুর রহমান আজ ০১ জুন ২০২৫ সংবাদপত্রে দেওয়া এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজধানীর বিজয় স্মরণীতে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’-এর দেয়ালে ’৫২-র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন গণআন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধারণ করে তৈরি করা স্মারক ম্যুরাল ভাঙার ঘটনায়।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে বাঙালী জাতি চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল, ’৬২, ’৬৯ এবং ’৭১ এ যা পরিণতি লাভ করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার স্মারক স্মৃতিচিহ্ন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঐসব গণসংগ্রামের ইতিহাস সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছিল। আমরা অবাক বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই একদল দুষ্কৃতিকারী সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন মুছে ফেলায় উন্মত্ত হয়েছে। কারো কারো বক্তব্যেও ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে ’২৪ দিয়ে প্রতিস্থাপনের কথা ফুটে উঠছে। যা ইতিহাস বিকৃতির নামান্তর। এগুলো ৭১ এর পরাজিত শক্তির উন্মাদনা।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ২৪ দিয়ে ৭১ মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র কিন্ত ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনা হলো ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনারই ধারবাহিকতা।
বর্তমান ইন্টেরিম সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতি মুছে ফেলার উৎসব শুরু করেছে। বিগত ৫৪ বছরে শাসকেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করায় দেশে যে দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাটতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছিল তারই বিরুদ্ধে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ’২৪ এর জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান শুধু দেশেই নয় সারা দুনিয়াতেই গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার। কিন্তু ৭১ এর পরাজিত শক্তি ’৭১ কে বাদ দিয়ে ’২৪ কে ধরাণ করতে চায়! ’২৪ এর স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হচ্ছে এটা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী বলে আমরা মনে করি। এবং আমরা নিন্দা জানাই।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, এই সরকার স্বাধীনতা বিরোধোদের সরকার নয় এই সরকার নিরপেক্ষ জনতার সরকার। ’২৪ কে জাগ্রত রাখতে হলে ’৭১ কে জাগ্রত রাখতে হবে। তাই বিজয় স্মরণীর ম্যুরাল সহ সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যসহ সকল স্মৃতি চিহ্ন যথাযোগ্য মার্যাদায় সংরক্ষণ করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন আমরা একই সাথে ’২৪ এর স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য রাজধানীতে অন্য কোন উপযুক্ত স্থানে ’২৪ এর স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি এবং সারাদেশে মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ করার ও দাবি করছি।। এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল শক্তিকে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি।।