রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৭ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || শনিবার | ২ আগস্ট ২০২৫ | ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ৭ সফর ১৪৪৭
মেহেদি হাসান বাচ্চু,বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসন বিলুপ্তির প্রতিবাদে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ ও এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে মোরেলগঞ্জ আব্দুল আজিজ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে আঞ্চলিক সাইনবোর্ড-বগী মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং জনসাধারণকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা এক নতুন প্রজ্ঞাপনে জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে বাগেরহাট-৪ আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্তটি ঘোষণার পর থেকেই এলাকাজুড়ে ক্ষোভ, উদ্বেগ ও প্রতিবাদের স্রোত বয়ে যায়। মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টিকে ‘বঞ্চনা’ হিসেবে দেখছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাগেরহাট-৪ একটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আসন। জনগণের দীর্ঘদিনের সাংবিধানিক প্রতিনিধিত্ব হঠাৎ করে বাতিল করে দেওয়া নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি জনগণের ভোটাধিকার, উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক চর্চার ওপর আঘাত।
বক্তারা আরও বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা আয়তন ও জনসংখ্যার বিবেচনায় জেলার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এলাকা। এমন একটি জনবহুল অঞ্চলের আসন বিলুপ্তি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনবিরোধী সিদ্ধান্ত, যা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় একজন নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোরেলগঞ্জ-শরণখোলার মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপজেলা নিয়ে পৃথক একটি সংসদীয় আসন থাকা সময়ের দাবি। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।
বিক্ষোভে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি ফকির তরিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল হক বাবুল, পৌর বিএনপির সভাপতি শিকদার ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফকির রাসেল আল-ইসলাম, মহিউদ্দিন বাদল, সামাদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ শেষে নেতারা ঘোষণা দেন, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, আসন পুনর্বিন্যাস একটি জাতীয় পর্যায়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, যার উদ্দেশ্য প্রতি আসনে সমান জনসংখ্যাভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক মহল এবং সচেতন নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন যেখানে জনসংখ্যা ও আয়তন তুলনামূলক বেশি, ঠিক সেখান থেকেই কেন আসনটি বিলুপ্ত হলো?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এখন দেখার বিষয়—নির্বাচন কমিশন জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সিদ্ধান্তে পুনর্বিবেচনা করে কি না।