আসমা বেগম বলেন,আমরা সবাই জানি, এই জমি তার ভাই বিদেশে যাওয়ার সময় তার বোন কে ২০০৬ সালে দিয়ে গেছে। কিন্তু সেই জমি দখলের জন্য তার ভাই সকালবেলা ১৫ থেকে ২০ জন লোক নিয়ে ঘেরে জোর করে জাল ফেলে মাছ ধরতে নামে। খবর শুনে তার বোন মোমেনা সেখানে গিয়ে বাধা দেন। এসময় তারা মোমেনার সাথে অশ্রাব্য গালাগালি করতে থাকে।আমি তখন গিয়ে তার ছেলেদের বিষয়টি জানাই। এরপর আর আমি সেখানে থাকিনি। পরে এসে দেখি, অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ শব্দ শুনে সবাই দৌড়ে গিয়ে দেখে, তিনি বিলের পাশে পড়ে আছেন।মোমেনা বেগমের মেজ ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন,“আমাদের ঘেরে এরা যখন মাছ ধরতে যায়, তখন মা আমাকে ফোন করে বলে— ‘তোর মামা অনেক লোকজন নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছে, আমি যাচ্ছি, তুইও আয়।’ এটাই ছিল মায়ের শেষ কথা।এরপর আমি দ্রুত পুলিশকে ফোন করি এবং মাঠে গিয়ে মাকে কল করি। একবার ফোন ধরলেও মা শুধু বলেন— ‘আমাকে দুইজন ধরে রেখেছে।’ এরপর আর কোনো সাড়া মেলেনি।
পরে সবাই মিলে খুঁজতে গিয়ে দেখি, মা ঘেরের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় কাদায় পড়ে আছে। আমি তখন যদি না যেতাম, হয়তো আমার মাকে আর বাঁচাতে পারতাম না।আমি প্রশাসনের কাছে এই ইউনুচ শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই ।
বৃদ্ধা মোমেনা বেগম আবেগভরে বলেন,“আমার নিজের ভাই, যাকে আমি কোলে-পিঠে মানুষ করেছি, আজ সেই ভাই-ই আমার উপর হাত তুলেছে। ২০০৬ সালে সে নিজেই আমাকে এই জমি বিক্রি করে টাকা নিয়েছিল। এখন আবার সেই জমি দখল নিতে এসে আমাকে মারধর করেছে। এই কষ্ট আমি কোথায় রাখবো?অন্য কেউ যদি আমাকে মারতো, হয়তো এতটা কষ্ট লাগতো না। কিন্তু আমার নিজের ভাই-ই যখন এমন করে, তখন সেটা সহ্য করা বড়ই কঠিন। আমার আর কোনো ভাই নেই। আমি এই জালিম ভাইয়ের বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন আমি তিল তিল করে কষ্টের টাকা জমিয়ে ওর কাছ থেকে এই এক বিঘা জমি কিনেছি । আজ সে-ই আমাকে আমার নিজের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।অভিযুক্ত ইউনুচ শেখ কে বার বার ফোনে কল দেওয়ার পর ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।বাগেরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহমুদুল উল-হাসান বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।