রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || বুধবার | ২২ মে ২০২৪ | ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ১৩ জিলকদ ১৪৪৫
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আজ গনহত্যা দিবস
মুকুল বোস বোয়ালমারী ফরিদপুর,প্রতিনিধি ,দৈনিক শিরোমণিঃ
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা হাসামদিয়া আজ গনহত্যা দিবস। কিন্তু দিবসটি পালনে রাজনৈতিক, সামাজিক এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের কোন কর্মসূচী ছিল না। ১৯৭১ সালের ১৬ মে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তিনি সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের সহযোগীতায় বোয়ালমারী উপজেলার হাসেমদিয়া গ্রামে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এতে শহীদ হয় হাসামদিয়া, রামনগর, রাজাপুর, ময়েনদিয়া, রাজাবেনি, মিঠাপুর পোয়াইলসহ কয়েক গ্রামের ৩৩ জন নিরীহ শান্তি প্রিয় মানুষ।১৯৭১ সাল ১৬ মে সকালে পাক সেনারা এসে ৩৩ জন নিরীহ শান্তিপ্রিয় মানুষদের সারিবদ্ধ ভাবে দাড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।উপজেলাটিতে আজ নিরবে নিভৃতে চলে গেল দিনটি। কোন সংগঠন থেকে এই দিবসটি পালনে কোন প্রকার কর্মসূচি গ্রহন করতে দেখা যায়নি দিনভর। এ উপলক্ষে কোন কর্মসূচি নেয়নি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বা সামাজিক সংগঠন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। শুধুমাত্র গনহত্যা দিবসে শহীদদের স্বরণীয় করতে এগিয়ে এসেছে শাহ জাফর টেকনিকালি কলেজের অধ্যক্ষ ও শহীদের স্বজন।দিবসটি উপলক্ষে রবিবার সকালে শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে কলেজ চত্বরে স্থাপিত শহীদদের স্মৃতির নামফলকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন কলেজটির অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন।এসময় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়া কলেজ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান প্রফেসর দেবাশীষ সাহা, মহাদেব চক্র বর্ত্তী, জীবন কৃষ্ণ রায়, ডা. বিধান চন্দ্র দে, মহাদেব চক্রবর্তী, সুবিনয় পোদ্দার প্রমুখ।আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সন্তানরা তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন – আজ স্বাধীনতা ৫০ বছর। বিভিন্ন সময় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহীদ দিবস স্মরণে করে। কিন্তু আজ স্বীকৃতি মিলেনি হাসামদিয়া গণহত্যায় আত্মদানকারি শহীদদের। লজ্জার বিষয় দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটিক স্মরণ করা উচিৎ ছিল অথচ তারা নিরব,সভায় শহীদ সন্তানেরা গণহত্যায় ৩৩ জন শহীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জোর দাবি জানানো হয়।উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশীদ জানান- প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হলেও করোনার জন্য এ বছর কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি।উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ মে তিন শতাধিক পাকসেনার একটি বহর যশোর থেকে রেলযোগে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর হাসামদিয়া গ্রামে তৎকালীন মুজিব বাহিনীর ফরিদপুর জেলা কমান্ডার শাহ মো. আবু জাফর ও তার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজে আসে। তাদেরকে না পেয়ে পাকহানাদার এর সহায়তা কয়েকটি গ্রামের ৩৩ জন নিরস্ত্র, নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় হিন্দু অধ্যাসিত এলাকায় আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হয় অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারের চালানো হয় লুটপাট। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৫০ এর অধিক দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.