মোঃ তরিকুল ইসলাম নড়াগাতী থানা প্রতিনিধি:ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নড়াইল–১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্যোগে নড়াইলের নড়াগাতী থানার দক্ষিণ যোগানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নড়াগাতী থানা বিএনপির সহসভাপতি লস্কর ফিরোজ আহমেদ।
সকাল থেকেই বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হন হাজারো নেতাকর্মী। ব্যানার, ফেস্টুন ও শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আলোচনা সভা শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বিদ্যালয় মাঠ থেকে বের হয়ে যোগানিয়ার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মাঠে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতির আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে ওঠেন। সেই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই দেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হয়েছিল, জাতি পেয়েছিল নতুন দিকনির্দেশনা, আত্মবিশ্বাস ও গণতন্ত্রের ভিত।
বক্তারা আরও বলেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন। সিপাহী–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ মুক্ত হয়েছিল অরাজকতা থেকে; প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন এক নিষ্কলুষ, সাহসী ও দেশপ্রেমিক সৈনিক—যিনি জাতীয়তাবাদী চেতনার বীজ বপন করে জাতিকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে পরিচালিত করেছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক বি. এম. নাগিব হোসেন বলেন, “৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব কেবল অতীতের একটি ঘটনা নয়, বরং আজও দেশের গণতান্ত্রিক আদর্শ, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার রক্ষার এক অনুপ্রেরণার উৎস। দেশের মানুষকে প্রশাসন ও নির্বাচনে প্রকৃত অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। জবাবদিহি ও সুশাসনের মাধ্যমেই দুর্নীতি ও অন্যায়ের অবসান ঘটানো সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন এখনও প্রকাশিত হয়নি। তাই কেউ হতাশ বা বিভ্রান্ত হবেন না। প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে দলের জন্য কাজ চালিয়ে যান। চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রকাশিত হলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত।”
বিশেষ অতিথি টেক্সাস বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, “৭ নভেম্বরের চেতনা আজও প্রাসঙ্গিক। দেশকে শান্তি, ন্যায় ও সাম্যের পথে পরিচালিত করতে রাজনৈতিক চেতনাকে জাগ্রত রাখা জরুরি। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও দুঃশাসন মোকাবিলা এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে লস্কর ফিরোজ আহমেদ বলেন, “৭ নভেম্বরের বিপ্লব ছিল দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জাতীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধারের এক ঐতিহাসিক মোড়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শই আমাদের প্রেরণা। সেই চেতনা ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”
বক্তারা আরও বলেন, আজও দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর জনগণ কিছুটা স্বস্তি পেলেও এখনও জবাবদিহি, সুশাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। তাঁরা অভিযোগ করেন, একটি কুচক্রী মহল এখনো দেশকে পদানত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বক্তারা ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান—যাতে দেশে ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার সমাজ প্রতিষ্ঠা পায়।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]