
আলামিন নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় একজন নিহত এবং অন্তত চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নূরজাহানপুর ও গণি শাহ মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিপন মিয়া (৩০) কুখ্যাত মনেক ডাকাত নামে পরিচিত মোন্নাফ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনেক ডাকাত গোষ্ঠী এবং থোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত মিষ্টারের ছেলে সিফাত-আরাফাত গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। শনিবার রাতে গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আরাফাতের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের সশস্ত্র লোকজন হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে মনেক ডাকাতের অনুসারীরা নূরজাহানপুর গ্রাম থেকে সশস্ত্র হয়ে গণি শাহ মাজার এলাকার তালতলায় প্রতিপক্ষ এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে হামলা চালালে অফিসে থাকা এমরান হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধদের প্রথমে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়। এর পথিমধ্যে শিপন মিয়া মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী শাহ আলম মিয়া বলেন, “সকালে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই তিনজন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।”
সংঘর্ষের পর প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, “গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতির ভাগাভাগি ও এলাকা দখল নিয়ে শিপন ও রিফাত গ্রুপের মধ্যে বিরোধ থেকেই এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা দিনদিন অবনতি হওয়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে নবীনগরে গুলিবর্ষণ, খুন, ডাকাতি ও চুরির মতো অপরাধের ঘটনা বাড়ায় উপজেলার সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।