জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ঢাকা বিভাগের বর্তমান ১৩টি জেলা থেকে সংকোচন করে মাত্র ৬টি জেলা নিয়ে নতুন করে ঢাকা বিভাগ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত জেলাগুলো হলো— নরসিংদী, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা।
এই প্রস্তাবটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে এই লিংকে। ১৮৭/১৮৮ পৃষ্ঠায় ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইল জেলার নাম না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি চিত্রে দেখা যায়, প্রস্তাবিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসে টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার সম্ভাবনা দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগের সাথে যুক্ত করার যেকোনো উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করছেন।
অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, টাঙ্গাইলকে ঢাকা বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এমন প্রস্তাব বাস্তবায়নের চেষ্টা হলে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।
ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের সময়ও টাঙ্গাইলকে সেই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে প্রায় ১০ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছিল— ফেসবুকে কেউ কেউ সেই ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, কেউ কেউ এই তথ্যকে গুজব হিসেবে উড়িয়ে দিলেও, অনেকেই বলছেন যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য উপেক্ষা করা যায় না।
এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেন:
টাঙ্গাইলের ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামো সবকিছুতেই এর গভীর সম্পর্ক ঢাকা বিভাগের সঙ্গে।
টাঙ্গাইলবাসী কখনোই এই মাটিকে অন্য কোনো বিভাগের সাথে যুক্ত হতে দেবে না।
কারণ, ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবেই টাঙ্গাইলের পরিচয়, গর্ব এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা।
প্রশাসনিক দিক থেকে, ঢাকা বিভাগীয় অফিসগুলোর সাথে টাঙ্গাইলের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের।
অর্থনৈতিকভাবে, টাঙ্গাইলের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও শ্রমবাজার মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক।
যাতায়াত ও অবকাঠামো মহাসড়ক, রেল, ব্রিজ সবই ঢাকার সাথে সরাসরি সংযুক্ত ও নির্ভরশীল।
এই বাস্তবতা ও ইতিহাসকে উপেক্ষা করে টাঙ্গাইলকে অন্য কোনো বিভাগের সাথে যুক্ত করার প্রস্তাব টাঙ্গাইলবাসী কখনোই মেনে নেবো না। অতীতেও এই প্রস্তাব সফল হয় নাই এবারও এই প্রস্তাব সফল হবে না।