জাহিদূল ইসলাম বেলাল,কুয়াকাটা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক, বাংলাভিশনের সাংবাদিক ও পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় অজ্ঞাত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর ও নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে মামলার বাদী কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে ডিবি কর্মকর্তারা অজ্ঞাত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে মারধর ও হয়রানি করা হচ্ছে ভূক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেছেন। তবে ডিবি কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মারধর ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় কুয়াকাটার পাঞ্জুপাড়া এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুল কাইউম আরজু।সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর পার্শ্ববর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলা থেকে ইলিয়াস হোসেন মিলুকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে তাকে নির্যাতন করে সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করাতে বাধ্য করা হয় এমনটাই দাবী তার পরিবারের।এর আগে তার ছেলে রাজন (১৩) কে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে পটুয়াখালী ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। রাজনের কাছ থেকেও এ ঘটনায় জড়িত জোরপূর্বক কয়েকজনের নাম বলাতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা।সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ইলিয়াসকে হয়রানি করা হচ্ছে। ইলিয়াস অতীতে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিএনপি সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার মামলারও শিকার তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে নয়টি মামলা রয়েছে। যে মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেনও আসামী রয়েছে। একটি পক্ষ রাজনৈতিক মামলাকে নিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি পরিবারের।তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, কাউকে মারধর বা নির্যাতন করা হয়নি। সাংবাদিক মিরনের হত্যা চেস্টার মামলায ইলিয়াস এর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামী ইলিয়াস তা স্বীকারও করেছে বলে দাবি তার। জিজ্ঞাসাবাদের নামে শিশু রাজনকে নির্যাতনের ঘটনায় আদালত ডিবি পুলিশের এসআই জহিরুল ইসলামকে শোকজ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলন উল্লেখ করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি মন্নান, হাজী শাহজাহান, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর সিকদার, বিএনপি নেতা আশরাফ সিকদারসহ স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ও ভুক্তভোগী পরিবার।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইলিয়াস হোসেন মিলুর ছেলে রাজন বলেন, ডিবি পুলিশের এসআই জহিরুল ইসলাম আমাকে আটক করে পটুয়াখালী ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে শারীরিক মানসিকভাবে বিভিন্ন রকম নির্যাতন করেন। সাংবাদিক মিরন হত্যা চেষ্টা মামলায় কয়েকজনের নাম বলতে বাধ্য করেন।এবিষয়ে সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, এ মামলায় তিনি কাউকে আসামী দেননি। ডিবির তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তাদেরকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ডিবির কাছে আসামীরা হত্যা চেস্টার সাথে জরিত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ (পিপিএম) জানান, এ মামলার যা কিছু হচ্ছে আমরা সাথে সাথে সেটা স্পষ্ট করছি। ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সাংবাদিক ও যুবনেতা জহিরুল ইসলাম মিরন ঢাকা থেকে বাসায় ফেরার পথে তুলাতলী সংলগ্ন নিজ বাসার সামনে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি মিরনের বাবা বাদী হয়ে মহিপুর থানায় একটি অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করেন।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]