সাইদুর রহমান, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে হিংস্র ও বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব চরম আকার ধারণ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে “সোলিড টিম বাংলাদেশ”-এর পক্ষ থেকে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
জানা যায়, “সোলিড টিম বাংলাদেশ” একটি অরাজনৈতিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন যা সরকারি, বেসরকারি, এনজিও, অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও নিজেদের সহায়তায় সামাজিক, মানবিক, মৌলিক অধিকার রক্ষা ও কর্মসংস্থানমূলক জনকল্যানে অন্যান্য কাজ করে থাকে।
রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে “সোলিড টিম বাংলাদেশ”-এর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর সাত দফা দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেছেন। তাদের দাবিগুলো হলো— ১. উপজেলা জুড়ে হিংস্র ও বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রনের জন্য জরুরি অভিযান পরিচালনা। ২. আক্রমণপ্রাপ্ত মানুষ ও প্রাণীদের জন্য বিনামূল্যে রেবিস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন সরবরাহ ও প্রয়োগ। ৩. কুকুরের আক্রমণে নিহত বা আহত ব্যক্তিদের পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্ত গবাদি পশুর মালিকদের দ্রুত সরকারি তহবিল থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান। ৪. দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য উপজেলা পর্যায়ে “পশু নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কর্মসূচি” চালু করা। ৫. কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো। ৬. স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত রেবিস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন মজুত রাখা। ৭. স্কুল ও জনসমাগম স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ।
তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিদিন কোথাও না কোথাও শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও পথচারী কুকুরের আক্রমণে আহত হচ্ছেন। মানুষ ছাড়াও গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগিও এই আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এতে বহু পরিবার জীবিকার একমাত্র উৎস হারিয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইতোমধ্যেই একাধিক শিশু ও বৃদ্ধ কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন, যাতে মানুষের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষিত থাকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র বলেন, “জননিরাপত্তার বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আশিকুজ্জামান বলেন, “কুকুর নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কার্যক্রমের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও সহায়তা পেলে মাঠ পর্যায়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, “রেবিস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন মজুত নেই, জেলায় চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। প্রায় ৩-৪ বছর পূর্বে প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কুকুর নিয়ন্ত্রণ করা হলেও বর্তমানে করা হয়নি, যা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। আক্রান্ত রোগীকে তাৎক্ষণিক হালকা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ১৫ মিনিট ধুতে হবে এবং অবশ্যই ভ্যাকসিন দিতে হবে।”