শিক্ষা সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সার্বজনীন মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও মর্যাদার সমার্থক বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) মহাসচিব আদ্রে আজোউলে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার ৭ম দিনে এক ভিডিও বার্তায় ইউনেস্কো মহাসচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৫০ বছর আগে ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ঐতিহাসিক এ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেশটির স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়ায় বাংলাদেশ এবং বিশ্ব এই দিনটি উদযাপন করছে। ইউনেস্কো যে কারণে এই ঐতিহাসিক ভাষণটি বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেই একই কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে যোগ দিয়েছে।’
ইউনেস্কো মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের কয়েক বছর পরেই ইউনেস্কোতে যোগ দেয়। বাংলাদেশ ও ইউনেস্কোর মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপনের আজ সেই ঐতিহাসিক দিন।
আদ্রে আজোউলে বলেন, ‘আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে, বিশেষত কন্যা শিশু এবং নারীদের অত্যন্ত সমৃদ্ধ সহযোগিতার ইতিহাসের উদযাপন করছি।’
তিনি বলেন, ‘সহযোগিতার মধ্যে আরও রয়েছে- পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার, বাগেরহাটের ঐতিহাসিক মসজিদ শহর এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং বেশ কয়েকটি বাঙালি ঐতিহ্যের পাশাপাশি জামদানি শাড়ি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।’
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিশেষ করে বহুসংস্কৃতিবাদের ক্ষেত্রে ইউনেস্কো-বাংলাদেশ সহযোগিতা একটি নমুনা বলে উল্লেখ করেন ইউনেস্কো মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট রয়েছে এবং বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।’
আদ্রে আজোউলে বলেন, ‘আমরা সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরষ্কার’ চালু করে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এই প্রতিশ্রুতি আরও জোরদার করব।’
বাংলাদেশ এবং ইউনেস্কোর এই বন্ধুত্ব আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান ইউনেস্কো মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আসুন এই মুহূর্তে আমরা আশাবাদী হই এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করি এজন্য যে, মানবতার পক্ষে এই লড়াই, একই সঙ্গে অধিকার বা স্বাধীনতার পক্ষে।’