আবুল কালাম আজাদঃ ৫২টি ভাষার বর্ণ দিয়ে লেখা অনন্য এক শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এ শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। শহীদ মিনারটিতে একই ক্যানভাসে ৫২টি ভাষায় ‘মা’ শব্দটি লেখা হয়েছে। সেইসাথে রয়েছে ‘মা’ নিয়ে লেখা বিশিষ্ট কবিদের কবিতার পক্তিমালা। এর স্থপতি রাজন দাস ব্যতিক্রমী এই শহীদ মিনারের নাম দিয়েছেন ‘মা: অবাক আলোর লিপি’।
২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত অনন্য এই শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলী। পৃথিবীর সকল সন্তানের কাছেই মা’য়ের আবেদন এক ও অভিন্ন। ‘মা’ ধ্বনিতেই কথা বলার শুরু, আর এই শব্দকে ঘিরেই মানবিকতার বিকাশ। “মা এক ‘অবাক আলোর লিপি’ নামের শহীদ মিনারটি যেন জানান দিচ্ছে গর্ভধারিনী জননীর নামের উচ্চারণ সন্তানের মুখে কেন ‘ম’ ধ্বনিতেই শুরু হয়।
লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের স্থপতি ও সহযোগী অধ্যাপক রাজন দাস বলেন, পৃথিবীতে দু’চারটি ভাষা ছাড়া সব ভাষাতেই মা শব্দটা ‘ম’ দিয়ে শুরু হয়। এটা একটা অতভূত ব্যাপার এই জায়গা থেকে ভাষার আসলে কোন শত্রু নেই, ভাষার কোন বাধা হয় না। এটাই আমাদের মূল চেতনার জায়গা।
ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় বাংলা যেসব ভাষার সংস্পর্শ পেয়েছে, সেসব বর্ণমালায় ‘মা’ শব্দটি লেখা হয়েছে। সব মিলিয়ে বায়ান্নটি ভাষার নিজস্ব বর্ণমালায় ‘মা’ শব্দটি ইঁট সিমেন্টের গাঁথুনিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই মিনারে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব বর্ণমালও। বিলুপ্তির হাত থেকে এসব ভাষাকেও রক্ষার আহবান এই শহীদ মিনারে।
রাজন দাস আরো বলেন, অনেক নৃগোষ্ঠি আছেন তাদের ভাষা আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে, সেইসব ভাষা আমরা এখানে প্রয়োগ করেছি। সব ভাষা বেচেঁ থাকুক এই অঙ্গিকারের চিন্তা থেকে এটা একটা প্রতিবাদের জায়গাও আছে এই শহীদ মিনারে।