তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, মানুষ সেবার পেছনে ছুটবে না, সেবা পৌঁছে যাবে মানুষের হাতের মুঠোয়।
প্রতিমন্ত্রী আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি অডিটোরিয়ামে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেনসহ বিভাগ ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, যা গ্রাম এলাকা পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের ৩ হাজার ৮শ’ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় এসেছে। তিনি বলেন, আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারিকালে অনলাইন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন এমনকি কোর্টের কার্যক্রমও চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮শ’ সরকারি সেবাকে ডিজিটালাইজড করার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৬০০টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সরকারি অফিসে কাজের গতিশীলতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনয়নে ই-নথি চালু করা হয়। বর্তমানে ৮ হাজারেরও বেশি অফিসের প্রায় ৯০ হাজারেরও অধিক কর্মকর্তা ই-নথি ব্যবহার করছে।
পলক বলেন, ফ্রিল্যান্সাররা গ্রামেগঞ্জে থেকেও বিদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ৬ হাজার ৭শ’ ৯০টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ মানুষকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। দেশে ৩৯টি হাইটেক/আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫টির র্নিমাণ শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৮টি শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরো ১২টির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় পর্যায়ক্রমে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে ১৫টিসহ মোট প্রায় ৮ হাজারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপন করা হয়েছে। আরও ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। ৩০০টি স্কুল অভ্ ফিউচার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিগত বার বছরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৫ লাখ মানুষকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে কমর্সংস্থানের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২০ লাখ। পলক বলেন, র্স্টাটআপ ও উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য ৪৪টি র্স্টাটআপ প্রতিষ্ঠানের ১১৮ জন স্টার্টআপ প্রতিনিধিকে কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ এবং ১৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব তেরি করা হয়েছে।
প্যানেল আলোচনার শুরুতে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।