
ফুলবাড়ী(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পাশে ২ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন বাসের হেল্পার মোঃ মমতাজুল ইসলাম(৬৫)। বিগত ৬ বছর আগে বাস কাউন্টারে যাত্রী ডাক-হাক করার সময় শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন হেলপার মমতাজুল ইসলাম। তার পরিবারের বড় ছেলে রিক্সা চালক রিপন,ছোট ছেলে সবুজ। রিপন বিয়ে করে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র আলাদা থাকেন। ছোট ছেলে সবুজ স্থানীয় এলিন মটরস্ এর পিয়নের চাকুরী করেন। বাবা মমাতাজুল ইসলামের চিকিৎসার ভার পড়ে ছোট ছেলে সবুজের উপরে ।
সবুজ প্রায় ৪ বছর ধরে বাবাকে বিভিন্ন চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা করালেও নিজের সংসার ও বাবার সংসার চালাতে প্রতিনিয়ত কঠিন অর্থাভাবে থাকেন তিনি। তাই অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে না পারায় গত ২ বছর যাবৎ প্যারালাইস হয়ে বিছানায় পড়ে থাকেন মমতাজুল ইসলাম। এর মাঝে অনেকবার তার ছেলেকে বলেছে আমাকে একটু বাহিরে ঘুরে নিয়ে আসো। কিন্তু এমন অসুন্থ্য বাবা কে বাহিরে নিতে খুব জরুরী একটা হুইল চেয়ার। সেই চেয়ার কিনতে লাগবে সবুজের দুই মাসের আয়। যা কোন ভাবেই সম্ভব হয়ে উঠেনি সবুজের।
তাদের বাবার এই আকুতির কথা শুনে এক সংবাদকর্মী তার পত্রিকায় সেই হৃদয় বিদারক কথা তুলে ধরে সংবাদ পরিবেশন করেন। সেই সংবাদটি চোখে পড়ে ফুলবাড়ীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনন্দ গুপ্ত‘র। পরের দিনে বুধবার বিকেল ৩টায় একটা দামি হুইল চেয়ার নিয়ে মমতাজুল ইসলামের পাশে দাড়ালেন আনন্দ গুপ্ত। দেখালেন মানবতার নিদর্শন।
স্থানীয় সোহেল বলেন, আমার বাড়ীর পাশে তাদের বাড়ী দীর্ঘদিন যাবৎ আমি তাকে অসুস্থ্য বসস্থায় দেখতেছি। সে ২ বছর যাবৎ তার বাড়ীতেই পড়ে আছেন। বাহিরে ঘোরা আমি দেখি নাই। ২ বছর পর আজ তাকে হুইল চেয়ার নিয়ে বাহিরে বের হতে দেখলাম।
মমতাজুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী আজ ২ বছর পর বাহিরের দুনিয়া দেখলো। আমাদের দ্বারা এই হুইল চেয়ার কেনার ক্ষমতা ছিলোনা। আমরা আনন্দ বাবুর এই হুইল চেয়ার পেয়ে অনেক খুশি।
মমতাজুল ইসলাম ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠে তার অনুভুতির কথা তুলে ধরে কেঁদে ফেলেন। এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে আনন্দ গুপ্ত‘র জন্য দোয়া করেন।
no views