1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন

সোনাগাজীতে রয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালীর বৃহত্তম মাল্টা বাগান

গাজী মোহাম্মদ হানিফ, সোনাগাজী (ফেনী) :
  • আপডেট : সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১

মাল্টা হচ্ছে Citrus sinensis উদ্ভিদের ফল। এর ইংরেজি নাম Orange বা Sweet orange, যদিও অনেকে ভুল করে একে grapefruit বলে থাকেন। এছাড়া Mandarin orange-কে বাংলায় কমলা বলা হয়, যা C. reticulata উদ্ভিদের ফল। মাল্টা ফলটি জাম্বুরা (Citrus maxima) এবং কমলা (Citrus reticulata) এই দুই ফলের শংকরায়নের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা হয়েছে। একে উর্দু ভাষাতেও ‘মাল্টা’ বলা হয়। এছাড়া হিন্দিতে একে ‘সান্তারা’ বলা হয়।

‘বারি- ১’ নামে একটি উন্নত মাল্টার জাত বাংলাদেশে উদ্ভাবিত হয়েছে যেটি অনেক রসালো, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ইদানিং বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে কিছু পরিমাণ মাল্টা চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় ও সহজলভ্য ফল এটি। প্রায় সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়, অনেকের প্রিয় এই ফল শিশুরাও খেতে বেশ পছন্দ করে। মাল্টাতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং চর্বিমুক্ত ক্যালরি রয়েছে। প্রবীণ, গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর নিয়মিত মাল্টা খাওয়া উচিত। কারণ এতে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে, মাল্টা মহান আল্লাহ তায়ালার এক অপূর্ব দান। এর উপকারিতা প্রচুর। তাই বলবো- সুস্থ সবল থাকতে চান প্রতিদিনই একটি করে মাল্টা খান। বেশ জনপ্রিয় ফল হলেও স্থানীয় ভাবে মাল্টার উৎপাদন খুবই কম। বাংলাদেশের চাহিদার অধিকাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

ফেনীর সোনাগাজীতে রয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রথম ও বৃহত্তম মাল্টা বাগান। ফেনী জেলাধীন সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চর সাহাভিকারী গ্রামের ছোট ফেনী নদীর তীরে রয়েছে সৌদি প্রবাসী মোশাররফ হোসেনের এই মাল্টা বাগান। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত উত্তর চর সাহাভিকারী গ্রামের হাজী শামসুল হকের প্রবাস ফেরত দুই পুত্র মোশাররফ হোসেন ও ইমাম হোসেন জানায়- তারা দু’ভাই দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর সৌদি আরবে চাকুরী ও বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছিলেন। সৌদি আরবে ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা হওয়ায় মোশাররফ হোসেন দেশে চলে আসেন। দেশে এসে বেকারত্ব ঘোচাতে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৬ একর জমিতে মাল্টা ফল চাষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

মোশাররফ হোসেন জানান- ইউটিউব ও ফেসবুকে মাল্টা চাষের প্রতিবেদন দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন ও পৈতৃক ৬ একর জমির মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ৪ একর জমিতে দুই হাজার দুইশতটি বারি-১ জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন। অতি লবনাক্ততার কারণে রোপিত অনেক গুলো চারা নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে তার মাল্টা বাগানে এক হাজার দুশো ষাটটি মাল্টা গাছের চারা রয়েছে। মাল্টা গাছের সুরক্ষার জন্য বাগানের চারপাশে তিনি আরো তিন শতাধিক লেবু গাছের চারা রোপণ করেছেন।

মোশাররফ হোসেন জানান- ২০১৯ সালের শুরুতে তিনি সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাল্টার উন্নত (বারি-১) জাতের চারাগুলো সংগ্রহ করে বাগানে রোপণ করেন। পাশাপাশি বাগানে বেশ কিছু কমলা গাছও লাগিয়েছেন। এবারের রবি মৌসুমে মাল্টা বাগানে গাছের সারির মধ্যে শীতকালীন শাকসবজি, ধনিয়া ও সরিষা লাগানো হয়েছে। খাল ও নদী বেষ্টিত আরো ২ একর জমিতে তিনি লাগিয়েছেন পাহাড়ি গাছ। আগামীতে আরো এক একর জমিতে উন্নত জাতের আম গাছের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোশাররফ হোসেন।

মোশাররফ হোসেন জানান- মাল্টা বাগানের চারা সংগ্রহ, রোপণ ও পরিচর্যা বাবদ এই পর্যন্ত তিনি প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। ফল আসা পর্যন্ত আরও ২০/২৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাল্টা চাষে কিছু পরামর্শ, সার ও কীটনাশক, বৈদ্যুতিক মোটর সহ বেশ কিছু সহায়তা পেয়েছেন। আগামীতে আরো সহায়তা করবে এমন আশ্বস্ত করেছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ। বাগানটি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চর সাহাভিকারী গ্রামে অবস্থিত হলেও ফেনী বা সোনাগাজী কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করলেও এখনও উল্লেখযোগ্য কোন ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা করেননি বলে জানিয়েছেন মোশাররফ হোসেন।

মাল্টা বাগানের প্রায় ৯৫ শতাংশ গাছে ডিসেম্বর মাসে ফুল এসেছে। প্রতিটি গাছে গড়ে প্রায় ২শতটি ফল ধরেছে। আগামী ৬ মাস পর ফলগুলো বাজারজাত করার উপযোগী হবে। ব্যাপক ফলনের বিষয়ে তিনি আশাবাদী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহ সরকারি বেসরকারি সংস্থা থেকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা পেলে এই মাল্টা বাগানটি হতে পারে ফেনী জেলা তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর বৃহৎ ও সফল মাল্টা বাগান। এই বাগানটি সফল হলে এই এলাকার অনেক মানুষ মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হবে। দেশের চাহিদা পূরণে এই বাগানটি রাখবে অবদান। উৎপাদন শুরু হলে আমদানি নির্ভরতা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

মাল্টা বাগানটি ঘিরে উৎসুক জনতার ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই সোনাগাজী, ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চলের নারীপুরুষ নির্বিশেষে শতশত মানুষ বাগানটি একনজর দেখতে নদী ও খাল বেষ্টিত এই দুর্গম এলাকায় ভিড় করছে।

ফেনী থেকে মাল্টা বাগানে যাওয়ার পথ- ফেনী সোনাগাজী রোড়ের ডাকবাংলা নামক স্থান হয়ে কাজীরহাট যাবেন। কাজীরহাট বাজারের পশ্চিমে মাবুল্লার ঘাট হয়ে নৌকায় ছোট ফেনী নদী পার হয়ে দক্ষিণ দিকে মোশাররফের মাল্টা বাগান। নোয়াখালী থেকে বসুরহাট ও হাজারীর হাট হয়ে কদমতলা বাজার পেরিয়ে পূর্ব দিকে চরপার্বতী গ্রামের নদীর তীরে সোনাগাজী- কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে মোশাররফের এই মাল্টা বাগানটি অবস্থিত।

Facebook Comments
৪২ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি