রেদোয়ান হাসান, সাভার প্রতিনিধি ঃ
কঠোর শাটডাউনের দ্বিতীয় দিনে ঢাকার সাভারের সড়ক গুলো ছিলো অনেকটাই ফাঁকা। কিছু সংখ্যক মানুষ রিকশা-ভ্যানে চলাচল করেছেন। গতকাল ভোর ও বিকেলে সড়কে শ্রমিকবাহী বাস দেখা গেলেও আজ নেই। সড়কের কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহলরত অবস্থায় দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাজার গুলোতে ছিলো মানুষের জটলা। এসব বাজার মনিটরিংয়ে দেখা যায়নি প্রশাসনের কাউকেই।
শুক্রবার ভোর থেকেই সাভার বাজার, বাসস্ট্যান্ড, হেমায়েতপুর, উলাইল, বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানীসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারী বাজার গুলোতে জনসমাগম দেখা গেছে। বিশেষ করে সাভার ও বাইপাইল এলাকার বড় পাইকারী ও খুচরা বাজার গুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিলো সরব।
বাইপাইলে আশুলিয়া পাইকারী মৎস মার্কেটের হাজারো লোকসমাগম ঘটলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বেশিরভাগই ছিলেন উদাসীন। অনেকের মুখে ছিলো না মাস্ক। আবার মাস্ক থাকলেও অনেকেই ভরে রেখেছেন পকেটে। জিজ্ঞেস করতেই নানা অজুহাতে মাস্ক ব্যবহার না করার অনীহা প্রকাশ করেছেন তারা। বাজার কতৃপক্ষকেও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নিতে দেখা যায়নি কেন উদ্যোগ।
মাছ কিনতে আসা খুচরা বিক্রেতা সোলায় হোসেন বলেন, ‘মাস্ক আছে কিন্তু পকেটে রাখছি। বৃষ্টিতে ভিজা গ্যাছেগা। নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাধারণ ক্রেতা এক গার্মেন্টস শ্রমিক বলেন, ‘আজ শুক্রবার এই বাজারে আসছি মাছ কিনতে। আমি মাস্ক ব্যবহার করি না। আমরাতো টেক্সটাইলে চাকরি করি। গার্মেন্টস শ্রমিক আমাদের করোনা নাই। গার্মেন্টে ঢোকার সময় ওই একটু আতটু পরি। অ্যারপর ভিতের ঢুকলে যা সেই।’
আড়তদার ও বাজার কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম স্বাস্থ্যবিধির কথা বলতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
তিনি বলেন, ‘বাজার কমিটি সকাল থেকে দুইবার মাইকিং করছে, ব্যানার টানাইছে। কেউ না শুনলে আমরা কি করমু? মাস্ক নিয়া আসে কিন্তু পড়ে না।’
বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানতে আপনাদের কোন ব্যবস্থা কিংবা মাইকিং দেখিনি এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আপনাগো কানে মনে হয় খইল হইছে হেই জন্যে মাইকিং শোনেন নাই। আর বাজারের সামনেই ব্যানার আছে দেখেন গিয়া।’
সাভার বাস স্ট্যান্ডের মাছ ও কাঁচামালের আড়তে গিয়েও স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি অনাগ্র দেখা গেছে অনেকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঁচামালের এক দোকানী বলেন, আজ শুক্রবারে বাজারে অনেক মানুষ আসছে বাজার করতে। এজন্যই এখানে ভীড় বাড়ছে। অনেকেই মাস্ক পড়ে আসেন। আবার অনেকেই মাস্ক ছাড়া। গতকালকে প্রশাসনের লোকজন আসছিলেন। ফাইনও করে গেছেন। কিন্তু মানুষ না শুনলে ওনারা কি করবে?
তবে এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলামের বলেন, ‘আমি অলরেডি বাইপাইলের ওই মাছ বাজারেই আছি। তবে বাজার ভোর থেকে শুরু হয়ে আগেই শেষ হয়ে গেছে। বাজার গুলোতে স্বাস্থয়বিধি নজরদারিতেও আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, শাটডাউনের প্রথম দিনেই সাভার শিল্পাঞ্চলে গণপরিবহন সংকেট গার্মেন্টসমুখী শ্রমিকদের ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেছে। পরিবহন না পেয়ে অন্য গার্মেন্টসর বাসে গাদাগাদি করেই কারখানায় গেছেন শ্রমিকরা। অনেকেই ১০টাকার ভাড়া ৫০টাকা দিয়ে রিকশায় কারকানায় গেছেন। হেঁটে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যাও অসংখ্য।