রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে আজ।
আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে সচিব পর্যায়ে ভার্চুয়াল এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আজ দুপুর ২টায় এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লুও ঝাওহুই ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব আই চান এর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় এবার চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় এ বৈঠক হতে যাচ্ছে। রাখাইনে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর জন্য বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। সেখানে সব এলাকার রোহিঙ্গাদের না পাঠিয়ে ধীরে ধীরে গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গাদের পাঠানোর উদ্যোগ নিলে সেটা প্রকৃতপক্ষে সুফল বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারে ২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হওয়া সামরিক বাহিনীর নিরাপত্তা অভিযানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে দমন-পীড়ন চালানো হয়। ওই সময়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের অভিযানের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে; তাদের নাম, পরিচয় ও রাখাইন রাজ্যের কোন এলাকা থেকে এসেছে তার বিস্তারিত বিবরণসহ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করে।
নিবন্ধনের তথ্য মোতাবেক, মিয়ানমারের অভিযানের পর আট লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মিয়ানমার তালিকা থেকে ৪২ হাজার রোহিঙ্গা নাম যাচাই করেছে। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ নাম মিয়ানমার প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে প্রায় ২৮ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ক্লিয়ার করেছে। কিন্তু তার মধ্যে কোনো রোহিঙ্গাকে এখনও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না- তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার অভাব দেখা রয়েছে। এ কারণে দুই দফায় ফেরত পাঠানোর আয়োজন করা হলেও রোহিঙ্গাদের কেউ রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে চাননি। তারপর কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যায়। তার ওপর অনুষ্ঠিত হয় মিয়ানমারে পার্লামেন্ট নির্বাচন।