নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
ঢাকায় অবস্থানরত মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ৩ দিন আগে চাচার বাড়ি ছেড়ে বের হয়েছিল ৮ বছর বয়সী শিশু সুমাইয়া ওরফে রুমি। শেষ পর্যন্ত মায়ের কাছে যাওয়া হয়নি তার। এই ক’দিন ছিল থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কের তত্ত্বাবধানে।অবশেষে রোববার (৪ জুলাই) রাত ৯ টার রুমির মায়ের সম্মতিতে তাকে তার মামা সফিকুল ইসলাম (৩৭) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।সকলের আদর-যত্নে থানাতে এই ক’দিন খুব হাসি-খুশি ছিল রুমি। তাই যেতে চাচ্ছিলো না। তার প্রতি মায়া জন্মেছিল কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যদের। তাইতো যাওয়ার সময় থানার পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে নগদ কিছু অর্থ এবং জামাকাপড় কিনে দিয়ে রুমিকে বিদায় জানিয়েছেন পুলিশ । শুধু তাই নয়, থানার মোবাইল নম্বর দিয়ে বলা হয়েছে যে কোন সমস্যা হলে রুমি যেন ফোন করে।গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামের চাচার বাড়ি থেকে বের হয় রুমি। পায়ে হেঁটে এবং অটোরিক্সায় চড়ে ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে আসে সে। দিশা না পেয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক শাখার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। তার কান্না শুনে পথচারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার মায়ের কাছে যাবে বলে জানায়। সে তার চাচার নামসহ ঠিকানা বলতে পারছিল। এ অবস্থায় পথচারীরা তাকে উলিপুর থানা হেফাজতে পৌঁছে দেয়।রুমি এবং তার স্বজনরা জানান, এরশাদুল হক ও কাজলী বেগম দম্পতির দু’সন্তান সুমাইয়া ওরফে রুমি (৮) এবং কামরুল (৬)। এ অবস্থায় ৯ মাস আগে এরশাদুল ও কাজলী বেগমের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কন্যা রুমিকে তার পিতার কাছে রেখে পুত্র কামরুলকে সঙ্গে নিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য ঢাকায় চলে যান কাজলী।এ দিকে পিতা এরশাদুল তার ছোট ভাই দিনমজুর মমিনুলের কাছে কন্যা রুমিকে রেখে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে এরশাদুল রিক্সা চালায়। কন্যার কোন খোঁজখবর নিত না। ফলে চাচার বাড়িতে ভালো না থাকায় মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য চাচার বাড়ি থেকে বের হয়েছিল রুমি।উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.ইমতিয়াজ কবির বলেন, রুমির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তার চাচা ও মামাসহ অন্যান্য স্বজনদের খবর পাঠানো হয়।রোববার রাতে তার মামা ও মামি থানায় আসেন। এ সময় অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো.আবদুল আজিজ আকন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর মা কাজলী বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তার সম্মতিতে মামা সফিকুল ইসলামের কাছে রুমিকে হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। থানায় থাকাকালীন রুমির সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করেন এএসআই আসমাউল হুসনা।