শিরোমণি ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বের প্রকৃতি-ই আগ্রাসী হয়ে উঠছে। আবহাওয়া-প্রকৃতি মোটেই মানববান্ধব থাকছে না। বরং চরম আতঙ্কের আবর্তে ঘিরে নিচ্ছে। অসময়ে চরম গরম। টানা খরা-অনাবৃষ্টি। হঠাৎ অল্প সময়েই অতিবৃষ্টি। তীব্র শীত। আকস্মিক ঢল-বন্যা। ঘন ঘন বজ্রপাত-বজ্রঝড়। সাগরে নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। উপকূলে অস্বাভাবিক প্রবল জোয়ার। এভাবে বছর জুড়ে চরম-ভাবাপন্ন অবস্হার মধ্য দিয়েই অতিক্রান্ত হচ্ছে আবহাওয়া। এক্ষণে সবচেয়ে ভয়ংকর পরিস্হিতিতে পতিত ইউরোপ। গোটা ইউরোপ পুড়ছে খরায়। এখন এক সময়ের প্রমত্তা নদীগুলোর পানি প্রবাহ শুকিয়ে যাচ্ছে।
গ্রীষ্মের রেকর্ড দাবদাহে শুকিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের অনেক নদ-নদী-জলাধার। ফ্রান্সের দীর্ঘতম নদী লয়ারের কিছু জায়গায় এখন পায়ে হেঁটে পার হওয়া যায়। এই নদীটি এর আগে কখনো এতটা শুষ্ক হয়নি। ইতালির পো নদীর পানি প্রবাহ তলায় ঠেকেছে। যার প্রভাব পড়ছে চাষাবাদে। কয়েক শ বছর ধরে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ রাইন নদী। কিন্তু চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাহাজ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। মধ্য ইউরোপের সঙ্গে কৃষ্ণসাগরের সংযোগ ঘটানো সার্বিয়ার দানিউব নদীতে এখন খনন শুরু হয়েছে। এর ফলে ইউরোপের জ্বালানি-শস্যসহ অন্যান্য বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে শিল্প, পণ্য পরিবহন, বিদু্যত্ ও খাদ্য উত্পাদনে।
ইউরোপীয় কমিশনের যৌথ গবেষণাকেন্দ্র (ইসি-জেআরসি) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইউরোপের এবারের খরা গত ৫০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক হতে পারে। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৬০ শতাংশ এলাকা খরা মোকাবিলা করছে। ইইউর বাইরে যুক্তরাজ্যসহ মহাদেশের অর্ধেক অংশ খরার প্রভাবে ভুগছে। পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণ ইউরোপ জুড়ে প্রায় দুই মাস ধরে কোনো উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি এবং শিগ্গিরই বড় মাত্রায় বৃষ্টিপাত হবে তার কোনো পূর্বাভাসও নেই। বার্তা সংস্হা এএফপিকে ইউরোপীয় কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের আন্দ্রেয়া টরেটি বলেন, ‘আমরা এই বছরের পরিস্হিতি পুরোপুরি বিশ্লেষণ করিনি, কারণ এটি এখনো চলছে। গত ৫০০ বছরে ২০১৮ সালের খরার মতো পরিস্হিতি হয়নি। এ বছর পরিস্হিতি আরো খারাপ।