হাবিবুর রহমান হাবিব,ঘাটাইল(টাংগাইল)প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
বিগত দিনে টাঙ্গাইল সহ উত্তরাঞ্চলে দেখা মিলতো বিভিন্ন ধরনের পেঁচার। ওইসব বিচিত্র পেঁচা নিয়ে কত কবি যে কত কবিতা লিখেছেন, তার খবর কে রাখে? কালের বিবর্তনে সময়ের পরিধিতে খাবার, বাসযোগ্য পরিবেশের অভাব, প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাসহ বহুমুখী কারণে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলে তেমন দেখা মেলেনা প্যাঁচার। অতীতে ‘হুতোম পেঁচা’র ভয় দেখিয়ে শিশুদের ঘুম পাড়ানো হতো। এখন বিলুপ্তপ্রায় ওইসব পেঁচা এ নিয়ে আর কবিদের কবিতা লিখতেও দেখা যায় না বা শিশুদের ‘হুতোম পেঁচা’র ভয়ও আর দেখানো হয়না। বিচিত্র বহু ধরনের পেঁচার মধ্যে বিরল প্রজাতির একটির নাম ‘লক্ষী পেঁচা’। মঙ্গলবার ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী বাজারের পরিত্যক্ত এলজিইডি অফিসের বড় বড় গাছের ডালে প্যাঁচাদের দেখা মেলে।সরেজমিনে জানা যায়, সাগরদিঘী বাজারের পরিত্যক্ত এলজিইডি অফিসের চারপাশে উঁচু গাছপালা থাকায় পাখিদের বসবাসের জন্য নিরাপদ এক আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলজিইডি অফিসের বড় বড় গাছের বিভিন্ন ডালে প্যাঁচাদের বসবাস দেখে আসছে এলাকাবাসী। ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত থাকায় প্যাঁচাদের জন্য এক অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে পরিত্যক্ত এই অফিসটি।বিভিন্ন প্রজাতির পেঁচার ডাক বিভিন্ন রকম। ডাকের ভিন্নতা অনুযায়ী বাংলায় বিভিন্ন পেঁচার বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। যেমন- হুতুম পেঁচা, ভুতুম পেঁচা,লক্ষ্মীপেঁচা, খুড়–লে পেঁচা, কুপোখ, নিমপোখ ইত্যাদি।পেঁচার মাথা বড়, মুখমন্ডল চ্যাপ্টা এবং মাথার সম্মুখদিকে চোখ। পেঁচার চোখের চারিদিকে সাধারণত বৃত্তাকারে পালক সাজানো থাকে যাকে ফেসিয়াল ডিস্ক বলে।টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন জানান, পেঁচা নিয়ে সমাজে নানা কুসংস্কার থাকলেও বাস্তবে এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। প্রযুক্তির ব্যবহার, গাছগাছালি কমে যাওয়া, মানুষের নির্মম আচরণ এসব নানা কারনে পেঁচা পাখি অনেক কমে গেছে বলে মনে করেন তিনি।সাগরদিঘী বন বিট অফিসের কর্মকর্তা সিদ্দিক মিয়া বলেন, পেঁচা একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। এ পাখিটি সচারাচর দেখা যায় না। সাগরদিঘীর পুরনো এলজিইডি অফিসে ঘন জঙ্গল বা বড় বড় গাছ থাকায় এরা এখানে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।