রবিউল হাসান রাজিবঃ যাকে সবাই এক নামে চিনে ফরিদপুরে জন্ম পল্লী কবি জসীমউদ্দিন। তিনি অনেক কবিতা লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আসমানীদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, এই খানে তোর দাদির কবর, এত হাসি কোথায় পেলে, এমনই সব কবিতার রচয়িতা পল্লী কবি জসিমউদদীন। এই মহান মানুষটির জন্ম ফরিদপুর শহরের অম্বিকাপুরে। নানাবাড়ি সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানাতে। সেখানে অদূরে পল্লী কবির নামে স্কুল-কলেজের নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দূর-দুরান্ত থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী এসে ভীড় জমায় কবির অম্বিকাপুরের বাড়িতে। তবে প্রতিদিন অনেক মানুষের উপস্থিতি থাকলেও কেউ কেউ এই মানুষটির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য কিছু উন্নয়ন মুলক কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। এরই মধ্যে কয়েকজন দর্শনার্থীর দেখা মিলে কবির বাড়ি প্রাঙ্গনে।
এদের মধ্যে অধ্যাপক আমিনুর রহমান সরদার খুলনা, সার্বিক সহযোগীতা ও তত্তাবধানে মোঃ মোজাহিদ হোসেন নরনিয়া ডুমুরিয়া খুলনা, মোঃ নাজমুল (বিজিবি সদস্য) রুস্তমপুর ডুমুরিয়া খুলনা, মোঃ নাসির (বিজিবি সদস্য) ভবানীপুর কালুখালী রাজবাড়ী, মোঃ নিয়ামত, পাংশা উপজেলার শরিষা এলাকার মোঃ রবিউল বিশ্বাস রাজবাড়ীগণ মিলে আসমানীকে একনজর দেখার জন্য শত জায়গায় ঘুরে শেষ পর্যন্ত হাজির হয় ফরিদপুরে। কবির বাড়িতে আসার পর সম্প্রতি সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া গ্রামের গবেষক ও লেখক কবি আব্দুর রাজ্জাক রাজার সাথে সাক্ষাৎ হওয়ার পরে আসমানীর বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
দূর থেকে আগত ব্যক্তিরা বলেন তারা বেশ কয়েকবার আসমানীর ঠিকানায় আসার চেষ্টা করলেও কিছু দালালদের ছলনায় পরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।
জানা যায়, কবির রচিত আসমানীদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও কবিটাটি পড়ে এই সব দর্শনার্থীরা তাদের পুর্ব পুরুষের নিকট হতে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন বাল্য কালেই।
এ কারণেই প্রবল ইচ্ছে থাকায় গন্তব্য স্থানে খুব সহজেই পৌছে যান এবং রসুলপুর গ্রামের স্থানীয়দের সাথে একাধিকবার আলোচনার মাধ্যেমে আসমানীর সকল ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এছাড়াও কবি আব্দুর রাজ্জাক রাজা দুর থেকে আসা অতিথিদের সাথে আলাপচারিতা ও তথ্য সংগ্রহ করতে আসমানীর বাড়ি আসতে বলেন দৈনিক আজকের সারাদেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শামসুদ্দিন মোল্লা, দৈনিক নাগরিক দাবি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক হায়দার খান, দৈনিক আজকের সারাদেশ পত্রিকা ও দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি রবিউল হাসান রাজিবসহ কয়েকজনকে।
যে আসমানীকে নিয়ে বাংলার মাটি ও মানুষের কবি, পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের রচিত কবিতা স্থান পায় আসমানী কবিতায়। সেই আসমানীর চিহ্নটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আসমানীর জন্ম হয়েছিল ০২-০২-১৯৩২খ্রী:, মৃত্যুর তারিখ – ১৭-০৮-২০১২ খ্রী:। খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উপরের উল্লেখিত ব্যক্তিদয় এর সার্বিক সহযোগিতায় গত ১৪-২-২০২১ ইং তারিখে আসমানীর কবরটি শনাক্ত করে পাকা স্থাপনা করা হয়। তবে বর্তমানে আসমানীর ২টি ছেলে সন্তানসহ স্থানীয় দুই একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, কোন দর্শনার্থী যদি কিছু উন্নয়নমুলক কাজের জন্য সহযোগীতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
দূর দূরান্ত থেকে অনেকে এসেছিল এ আসমানীর বাড়ির আঙিনায় তার স্মৃতি হিসেবে উন্নয়নমূলক কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কিন্তু কেউ কেউ ঐ সব দর্শনার্থীদের সাথে প্রতারণা করে পুনরায় তাদের গন্তব্য স্থানে ফিরে যেতে বাধ্য করে। যার ফলে এই আসমানীর বাড়িটি এখনো কোন উন্নয়নের আওতায় আসতে পারেনি। তাই এই প্রতারক দ্বয়ের হাত থেকে মুক্তি কামনা করে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও উল্লেখিত উদ্যোগ দাতাগণ।