
লিয়াকত রাজশাহী ব্যুরো, দৈনিক শিরোমণিঃ বাঘা উপজেলার শিমুলিয়া এলাকার অসহায় পরিবারের মেধাবী ছাত্র শাখাওয়াত এর অর্থের অভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তাকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক। সোমবার ( ৩ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শাখাওয়াত এর হাতে মেডিকেলে ভর্তির জন্য বিশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
সহায়তা পেয়ে সাংবাদিকদের শাখাওয়াত জানান, ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভেবেছিলাম- আর্থিক দৈন্যতার কারণে হয়তো আর মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা হবে না। কিন্তু আমার এমন অনিশ্চয়তার কথা জেনে জেলা প্রশাসক স্যার পাশে দাঁড়ালেন। এই যেন কোনো দেবদূত বা ফেরেশতা আমার পাশে দাঁড়ালো। এ জন্য আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এছাড়াও তিনি আরও জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে আমি ছোট। আমার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বাঘা উপজেলার শিমুলিয়া এলাকায় আমার বাড়ি। আমার বাবা ২০১২ সালে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা। এর ফলে আর্থিক দৈন্যতা চেপে বসলেও অদম্য সাহস আর মনের জোরে নানা সঙ্কট মাথায় নিয়েই আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকি। আমি শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সারদা সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হই।
এরই মধ্যে আমি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেই। ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। এমতাবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে আমি বিচলিত হয়ে পড়ি। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে আমি শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম স্যারের পরামর্শে আজকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে সহযোগিতা চায়।
তিনি আমার কথা শোনা মাত্রই আমার ডকুমেন্ট গুলো দেখে আমার দিকে তার সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। আমার ডাক্তার হওয়ার পথকে সহজ করে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমি আল্লাহর কাছে জেলা প্রশাসক স্যারের সর্বাত্মক মঙ্গল কামনা করি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, শাখাওয়াত এর মেডিকেলে ভর্তির জন্য আপাতত বিশ হাজার টাকা দরকার ছিল, তার হাতে তা তুলে দিয়েছি। তবে প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পক্ষ থেকে নির্দেশনা রয়েছে কোনো মেধাবী ছাত্র যেনও অর্থের অভাবে অকালে ঝরে না পড়ে, তার জন্য তিনি সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। তারই নির্দেশনায় মেধাবী শিক্ষার্থীর সহায়তা ও শিক্ষার প্রসারসহ যে কোনো মানবিক সহায়তা প্রদানে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক সর্বদা তৎপর আছে এবং আগামীতেও থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
no views