শিরোমণি নিউজ ডেক্সঃ
ফরিদপুর সদর উপজেলার আওতাধীন বসুনরসিংহদিয়া গ্রামের সংখ্যালঘু নিরাঞ্জন দাসের পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালায় দূবৃত্তরা। এই সনাতন (হিন্দু) ধর্মালম্বী পরিবারের উপর নির্যাতন ও মন্দিরে হামলা করায় বিক্ষোভ মিছিল পালন ও কঠোর শাস্তির দাবি করেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার ৯নং কানাইপুর ইউনয়ন এর নির্যাতিত হিন্দু সম্প্রদায়। নির্মম এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা আহত নিরাঞ্জন বাদি হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে।
জঘন্য এ অপরাধে জড়িত থাকায় ১/১০/২০২০ইং বুধবার বিকেলে স্থানীয় কানাইপুর বাজার থেকে প্রধান আসামী কানাইপুর ইউনিয়ন আওয়ালীগের সভাপতি মোঃ জুলিফিকার আলী মোল্লা মিনুকে আটক করেছে পুলিশ। মামলার এজাহার ও স্থানীয়দের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কানাইপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদল সেখের ছেলে রুবেল সেখের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত একই ইউনিয়নের বসুনরসিংহদিয়া গ্রামের নিরাঞ্জন দাস (৫৩)’র বাড়িতে ঢুকে তাকে বেদম মারধর করে।
এ সময় তার স্ত্রী নমিতা দাস (৪৫), মা টগরী দাস (৭৩) ছেলে নিপু দাস (১২) নিরাঞ্জনকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তাদেরকেও নির্মমভাবে মারপিট করা হয়। মারপিট চলাকালে দুর্বৃত্তরা ঘরের বেড়া ও বাড়ির মন্দির ভাংচুর করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ আহতদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এদিকে কানাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জুলফিকার আলী মোল্লা ওরফে মিনু মোল্লা একই গ্রামের বাসিন্দা, নির্মম এই অপরাধ স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করলে পুলিশ চলে যায় এবং যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা নিরাঞ্জন দাসের পরিবারকে আশ্বাস দিয়ে যান, ‘নির্মম এই মারপিটের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ন্যায্য বিচার করা না হলে, আপনারা থানায় চলে যাবেন, আমরা তখন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এক পর্যায়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘুগণ সুবিচার না পাওয়ায় ও মামলার ঘটনায় মিনু মোল্লা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করলে, কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম তাকে আটক করে পুলিশ।
এখানে উল্লেখ থাকে যে বর্তমান ফরিদপুর রাজনৈতিক অবস্থা ঘোলা পরিবেশে দলীয় আক্রোশের জের ধরে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতা কর্মী হামলা মামলার শিকার হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন নেতা কর্মিদের সাথে মতের বিরোধ থাকার জের ধরে অনেকের সাথে বিরোধ চলে আসছে।
একই ভাবে সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামলীগের চেয়ারম্যান ফকির মো: বেলায়েত হোসেন ও ইউনিয়ন সভাপতি জুলফিকার আলী মোল্লা মিনুর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। জানা যায়, চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেনের ছোট ভাই এনায়েত ফকিরের সারের দোকানের কর্মচারী হিসাবে নিরাঞ্জন দাস দায়ীত্ব পালন করে আসছিল। দলীয় এই কোন্দলের বলি হতে পারে এই নিরাঞ্জন বলে মনে করেছে কানাইপুরের স্থানীয় জনতাসহ সচেতন মহল।