বাংলাদেশি কোনো নাগরিক যদি সৌদি আরবে রোহিঙ্গা হিসেবে গিয়ে থাকে অবশ্যই তাকে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। এছাড়া রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্ট নিয়ে গেছে তারাও যদি নবায়নের আবেদন করে তবে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত কিং সালমান রিলিফ সেন্টার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জন্য ৩০ হাজার খাদ্য ঝুড়ি বিতরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে অবস্থানরতরা বাংলাদেশি পাসপোর্ট যদি একবার পেয়ে থাকে, আর যদি বাংলাদেশি পাসপোর্ট না পেয়ে থাকে, তারা যদি রোহিঙ্গা হয়ে থাকে তবে এগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে চিন্তা করতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটা আজকের না। ৫০-৬০ বছর আগেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছিল। সৌদি আরবও এ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। বর্তমানে সৌদির একটি শহরে রোহিঙ্গারা একটা ক্যাম্প করে থাকছে।
তিনি বলেন, আমাদের কথা হচ্ছে তারা সবাই রোহিঙ্গা, মিয়ানমারের অধিবাসী। আমরা সব সময় বলে আসছি যারা রোহিঙ্গা তারা বাংলাদেশি নাগরিক নন। আর যদি আমরা কাউকে পাসপোর্ট দিয়ে থাকি সে পাসপোর্ট নবায়ন অবশ্যই করব। কিন্তু মিয়ানমারের অধিবাসী যারা, তারা মিয়ানমারের নাগরিক, তারা বাংলাদেশের নাগরিক নন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কিং সালমান হিউম্যানিটারিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টার বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা এবং স্বাগতিক দরিদ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০ হাজার ফুড বাস্কেট (খাদ্য ঝুড়ি) বিতরণের জন্য সৌদি বাদশাকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশ-সৌদি আরবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে যে ধরনের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ আমাদের দেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ তা এড়াতে পেরেছে। আমাদের দেশে দরিদ্রের হার কমেছে। বর্তমানে দেশে অতি দরিদ্রের হার শতকরা ১১-১২ ভাগ এবং তা ক্রমহ্রাসমান এবং দরিদ্র মানুষের বেশিরভাগই দেশের উপকূলীয় এলাকায় বাস করেন। আশা করছি, আপনাদের দেওয়া এসব সুবিধা এসব দরিদ্র মানুষের কাছে বণ্টন করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এসব মানুষের গৃহনির্মাণে সৌদি সরকার সহায়তা করলে তা হবে সৌদি সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার দেশে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘসহ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে। আশা করি, রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে সৌদি সরকার আমাদের পাশে থাকবে। কিং সালমান হিউম্যানিটারিয়ান এইড এন্ড রিলিফ সেন্টার বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্বাগতিক সম্প্রদায়কে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্পের নির্বাহী দিকটি মুসলিম ওয়ার্ল্ডলীগ বাংলাদেশের এনজিও ব্যুরো ও শরণার্থী ত্রাণ ও উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসন কমিশনের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয় সাধন করে কাজ করেছে।
অনুষ্ঠানে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান উপস্থিত ছিলেন।