বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সঙ্গে তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত) বিয়ের বিষয়ে হাইকোর্টের তলবে স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কবিতা রানী দত্ত রায় আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চান। এ বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের দ্বৈত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। অন্যদিকে স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কবিতা রানী দত্ত রায়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট স্নিগ্ধা সাহা।
আঞ্জু কাপুরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আর সুবহান। মোস্তফা জগলুলের দুই মেয়ে মুশফেকা ও মুবাশ্বিরার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সিটি ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন মির্জা সুলতান আল রাজী।
এর আগে গত ৮ মার্চ নির্ধারিত দিনে স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কবিতা রানী দত্ত রায় আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিয়ের রেজিস্ট্রার বই, ধর্মত্যাগ করার তথ্য এবং বিয়ে পড়ানোর সব নথি জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সেদিন আদালতের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না। তাই তাকে আবারও হাইকোর্টে উপস্থিত হতে হয়।
সেদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেছিলেন, বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি জালিয়াতি করে দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুর সিটি ব্যাংকের গুলশান এভিনিউ শাখা থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় তিন রকমের তারিখ এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বন্ধের দিনে কিভাবে টাকা তোলা হলো তা নিয়ে ব্যাংকের ম্যানেজারকে তলব করা হয়েছিল। তিনি আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সিটি ব্যাংক থেকে টাকা তোলার ব্যাখ্যার শুনানির মাঝে আঞ্জু কাপুরের সঙ্গে মোস্তফা জগলুলের বিয়ের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের বক্তব্য শুনানি শেষ হয়েছে গত ১ মার্চ। ওই দিন আদালতের শুনানিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীর সঙ্গে মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষের বিয়েতে যে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট আছে সেই আইন অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে কি-না জানার জন্য স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু গত ৮ মার্চ নথিসহ হাইকোর্টে উপস্থিত হয়েও শুনানিতে না থাকায় তাকে ১৪ মার্চ আবারও আসতে বলেছিলেন আদালত। কিন্তু আজ শুনানি না করে আগামী ৬ এপ্রিল পরবর্তী দিন ঠিক করে আদেশ দেন আদালত।